ফারুক হোসেন ডন, নাচোল (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সংসদীয় আসন ৪৪ “চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২” আসন নাচোল, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক এমপি আমিনুল ইসলাম। কিন্তু বিএনপি’র সম্ভাব্য মনোনয়ন ঘোষণা নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয়ভাবে প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মতামত উপেক্ষিত হওয়ায় এমন প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর নাচোল উপজেলা ডাকবাংলোতে আয়োজিত বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিশাল কর্মী সভার আয়োজন করা হয়, সেখানে তারা দাবি তোলেন, তৃণমূলের কোনো সমর্থন না নিয়ে আমিনুল ইসলাম’কে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। নাচোল গোমস্তাপুর ও ভোলাহাটবাসী চান, যার জনপ্রিয়তা বেশি ও তৃণমূলের জন্য যিনি কাজ করবেন, তাকে মনোনয়ন দেওয়া হোক। যে পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের বিএনপি’র মনোনয়ন পরিবর্তন করা না হবে, সেই পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা। এ লক্ষ্যে তিন উপজেলায় পর্যায়ক্রমে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।
বিএনপি’র জনবন্ধব নেতা ও অন্যতম মনোনয়ন প্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার ইমদাদুল হক মাসুদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিভিন্ন ভাবে বিভক্ত দলকে, ঐক্যবদ্ধ করা ছাড়া, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন অসম্ভব।
অন্যদিকে আমরা লক্ষ্য করছিযে, সাধারণ জনগণের মাঝে, রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আকাঙা তীব্র।
জনসাধারণ গতানুগতিক ধারার রাজনীতিবিদদের পরিবর্তে চাইছেন সত্যিকার অর্থে, সৎ, যোগ্য, জনদরদী ও জনসাধারণ কে সাথে নিয়ে কাজ করার মানসিকতাসম্পন্ন নতুন নেতৃত।
যিনি শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে, দেশকে এগিয়ে নেয়ার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এর যে পরিকল্পনা তাতে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারবেন।
যিনি পারবেন আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করে ও সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে আমাদের পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর জনপদকে এগিয়ে নিতে।
আমরা বিশ্বাস করি মনোনয়ন প্রার্থীদের মধ্যে থেকে দক্ষ, যোগ্য, সৎ, মেধাবী ও ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব, যিনি এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ, ছাত্রছাত্রী, নারীপুরুষ, আবাল বৃদ্ধ বৃদ্ধা দের সাথে আস্থা ও সম্প্রীতির সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। তিনিই পারবেন, বিভক্ত বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করে সংসদ নির্বাচনে কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করতে।
জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক মাসউদা আফরোজ হক শুচি বলেন, “আমরা এলাকার মানুষের সঙ্গে দিনরাত কাজ করি। কিন্তু যাকে এলাকায় দেখা যায়নি, তিনি হঠাৎ এসে মনোনয়ন পেয়ে গেলে সংগঠনের ভেতরে ভাঙন ধরবে।
এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের খোকন বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি অনুরোধ জানাই, তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্ব দিন। তৃণমূলই বিএনপির শক্তি। তাদের উপেক্ষা করলে নির্বাচনী মাঠ দুর্বল হয়ে পড়বে।
এর আগে গত ৩ নভেম্বর রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭টি আসনের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও স্থানীয় মতামতের প্রতিফলন নিশ্চিত না হলে নাচোল গোমস্তাপুর, ভোলাহাট বিএনপির নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় তীব্র বিভাজন তৈরি হতে পারে।
উক্ত কর্মী সভায় উপজেলা এবং জেলা বিএনপির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন।

Reporter Name 
















