জুলাই জাগরণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে নারী শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করতে কাজ করেছিলেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির রাবেয়া ঝুমুর। আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে গিয়ে হয়েছেন হামলা ও হয়রানির শিকার।
জুলাই আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাদের এই সাহসী ভূমিকার জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিজয়ের দিকে এগিয়ে গিয়েছিল। নরীরা মিছিলে, বিদ্রোহে ছিলেন সামনের সারিতে। শাসক গোষ্ঠির কোনো রক্তচুক্ষু তাদেরকে পিছপা করেনি। ফলে এ দ্রোহের জুলাইকে সহজে দমন করা যায়নি।
জুলাই জাগরণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে নারী শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করতে কাজ করেছিলেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির রাবেয়া ঝুমুর। আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে গিয়ে হয়েছেন হামলা ও হয়রানির শিকার। আজকের এই নতুন বাংলাদেশ রাবেয়ার মতো অদম্য নারীদের হাত ধরেই বিজয়ের মুখ দেখেছিল।
সম্প্রতি জুলাই জাগরণের সেই বিভীষিকাময় স্মৃতি, সামনে থেকে দেখা উত্তাল দিনে রাজপথের অভিজ্ঞতা বলতে দৈনিক নয়া দিগন্ত অনলাইনের মুখোমুখি হয়েছিলেন রাবেয়া ঝুমুর।
নয়া দিগন্ত : জুলাইকে জাগ্রত রাখতে কী কাজ করছেন?
রাবেয়া : সত্য বলতে, জুলাই আমাদের জন্য প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। জুলাই অম্লাণ থাকবে। জুলাই জাগ্রত থাকবে আমাদের কথা, কাজ ও সামগ্রীক জীবনে। স্নাতক শেষ করে একটি সংবাদ চ্যানেলে গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে কাজ করছি। পাশাপাশি বই পড়ছি। জুলাইকে নিয়ে কিছু কাজ করার প্ল্যান আছে।
নয়া দিগন্ত : আন্দোলনে যোগ দেয়ার প্রেরণা কী ছিল?
রাবেয়া : জুলাইয়ের ১৬ তারিখ যমুনার সামনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে যোগ দেই। খুব একটা পরিকল্পনা ছিল না। মনে আছে সেদিন ১৪ বা ১৫ তারিখের ক্যাম্পাসে হামলা, সরকার এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের বিচ্ছিরি বয়ান দেখে ঘরে থাকতে পারিনি। একটি বৈষম্যহীন, মানবিক বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে আন্দোলনে নেমে পড়লাম।
নয়া দিগন্ত : জুলাই আন্দোলন কীভাবে মোড় নিল?
রাবেয়া : আন্দোলন কোন দিকে মোড় নিবে তখনো বুঝতে পারিনি। তৎকালীন ফ্যাসিস্ট রেজিমের সবকিছু নিয়েই সচেতন এবং সতর্ক ছিলাম। দেখলাম, শিক্ষার্থীদের এই সাধারণ একটি দাবিকে যেভাবে বানচালের চেষ্টা করা হচ্ছে তা ঠিক হচ্ছে না। এর সাথে একের পর এক হামলা, চক্রান্ত এসব মানতে পারছিলাম না। তখন মনে হয়েছিল এতদিন অনেক দেখেছি, কিছু বলিনি। এখন একদম ক্যাম্পাসে, হলের ভেতরে ঢুকে নিরাপরাদ ছাত্রদের আঘাত করছে এতো মানা যায় না। এদেরকে জবাবদিহী করতে হবে মাথায় ওই চিন্তা ছিল। তারপর তো লাশ পড়া শুরু হয়ে গেল। দায় ও রক্তের ঋণ ভারী হতে থাকে।
নয়া দিগন্ত : সবাই এক হয়েই কি আন্দোলন শুরু করেছিলেন?
রাবেয়া : না। শুরুর দিকে তো একদম নিজ তাগিদেই গিয়েছি। জুলাইয়ের ১৬ তারিখ যখন বের হয়েছিলাম তখন কাউকে বলিনি। শুধু জানতাম যমুনার সামনে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা একত্রিত হবে। আমার গ্রিন ইউনিভার্সিটি গ্রুপে দেখেছিলাম, যারা যারা কুড়িলের আশপাশে আছেন ওদিকে আসেন। ওখানে আশপাশের অনেক ইউনিভার্সিটি ছিল। একে একে দেখলাম সবাই রাস্তায় নেমে এলো।
নয়া দিগন্ত : আন্দোলনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
রাবেয়া : আসলে আমাদের এই তরুণ প্রজন্মের চিন্তা-ভাবনা, রাগ, হতাশা একই ছিল তাই মনে হচ্ছিল আমরা সবাই এক। তারপর যখন আমার বন্ধুদের জানালাম, আমি ওখানে আছি। সবাই বলছিল, আমাকে বলিসনি কেন, আমিও যেতাম। তারপর ব্যাপারটা খেয়াল করলাম সবাই আসতে চাচ্ছে কিন্তু কেউ একা শুরুটা করতে পারছে না। একই দিনে আমার আরেক বান্ধবী তার ক্লাস শেষে ফেরার সময় ব্র্যাকের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভিড় দেখে ওখানেই আন্দোলনে যোগ দেয়।
নয়া দিগন্ত : আহত ছাত্র-জনতা নিয়ে আপনার স্মৃতি বলেন।
রাবেয়া : রাজপথে আপনার সহযোদ্ধারাই আপনার আসল মোটিভেশন। আমার বয়সী সাধারণ শিক্ষার্থীরাই লাঠি, কাঠ, স্কেল, ইট যে যা কিছু পেয়েছে তা নিয়েই সামনে এগিয়ে যাচ্ছিল। গুলি খাচ্ছে, টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেডে আহত হচ্ছে, লুটিয়ে পড়ছে আবার দাড়াচ্ছে। এসব উপেক্ষা করে অদম্য সাহস নিয়ে সব বাধা ঠেকিয়ে দিয়েছিল। এটা দেখে মনে হচ্ছিল, আমরা দুর্বার পিছু হটার আর কোনো কারণ নেই। মাথায় একটা লাইন ঘুরছিল- ‘আমার ভাই মরলো কেন?।’ কেউ আহত হয়েছে, গায়ে বুলেট লেগেছে ব্যান্ডেজ করে আবার আন্দোলনে যোগ দিয়েছে।
নয় দিগন্ত : এমন পরিস্থিতিতে নিজের মধ্যে ভয় কাজ করেনি?
রাবেয়া : ভয় ছিল না। এমন অসাধারন দৃশ্য দেখে ভয়টয় সব দূর হয়ে গেছে। ১৮ তারিখে আমাদের (মেয়েদের) একটা দল গলির মধ্যে অবস্থান নিয়েছিলাম। রাস্তায় কী অবস্থা সেটা দেখার জন্য যখন বের হই তখন আমার সামনে তিনজন ছেলে আরেকজনকে ছেলেকে ধরে পাশের হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিল। রাস্তায় দাঁড়িয়ে তখন আমি অবস্থা দেখছিলাম। কিছুক্ষণ পর হাসপাতাল থেকে দৌড়ে দুইজন চিৎকার করতে করতে বের হলো, আমার ভাই আর নেই। আমি অবাক হয়ে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে ছিলাম। মৃত্যু এতো সহজ! এরপর থেকে নিজের জন্য আর ভয় কাজ করেনি।
নয়া দিগন্ত : একটা সময় পর তো কারফিউ, নেট বন্ধ ছিল তখন কীভাবে কাজ করলেন?
রাবেয়া : দেখেন, একদিকে মেয়ে হওয়ায় বাসায় না জানিয়ে আন্দোলনে অংশ নেয়া কঠিন ছিল। তার মধ্যে কারফিউর দিনগুলোতে আরো বেশি। একেকবার একেক বাহানা দিয়ে বের হতাম। ইন্টারনেট না থাকার সময়টাতে যোগাযোগ করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। প্রচুর টেক্সট মেসেজ আর ভয়েস কল কিনতাম। পাবলিক, প্রাইভেট অনেক বিশ্ববিদ্যালয়তেই অনেকে আমার পরিচিত ছিল। ভালো বন্ধুও ছিল। আর আন্দোলনের অংশ নেয়ার জন্য আরো কয়েকজনের সাথে পরিচিত হয়েছিলাম। আইপি অ্যাড্রেস দিয়ে যোগাযোগ করতাম। ফোন কলে প্রচুর মানুষের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম।
নয়া দিগন্ত : মানুষের সাথে তথ্য আদান-প্রদানের এই উদ্যোগ কতটা কার্যকর হয়ে উঠে?
রাবেয়া : আন্দোলনে আমার সাংবাদিক বন্ধুরাও ছিল। কারো বাড়ির আশপাশে কেউ মারা গেলে, এরকম শুনলে তাকে কল দিয়ে কনফার্ম হতাম। আদৌ মারা গেল কিনা, তারপর সেটা সাংবাদিক বন্ধুদের জানাতাম বা ওদের কাছ থেকে কিছু শুনলে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বা স্কুল কলেজের বন্ধু যারা ছিল আবার তাদেরকে জানাতাম। এভাবে একটা কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলাম।
কোনো দফা, দাবি বা নতুন কর্মসূচি এলে প্রত্যেকে ফরওয়ার্ড করতাম। আমার দেশের বাইরের বান্ধবী প্রতিদিন কল দিয়ে কী হচ্ছে, কীভাবে দেখা যাচ্ছে, প্রবাসী সাংবাদিক বা বুদ্ধিজীবীরা কী বলছে, ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া কীভাবে জিনিসটাকে দেখাচ্ছে সেই বিষয়ে ধারণা দিত।
আরেকটা ভালোলাগার ব্যাপার হলো, আমার নিজের থেকে ফোনে তেমন রিচার্জ করতে হয়নি। কোনো না কোনো বন্ধু, কোনো ভাই-বোন রিচার্জ করে দিত। অনেকে ফোন দিত শুধু খবর জানার জন্য। এরকম একটা ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কে তৈরি হয়েছিল।
নয়া দিগন্ত : যে আকাঙ্খা নিয়ে আন্দোলন করলেন তার প্রতিফলন কতটুকু হচ্ছে?
রাবেয়া : তা খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। আমি এখনো ইউটোপিয়ার মধ্যে বেঁচে আছি। ভাবতাম, সবকিছু যেভাবে দেখতে চেয়েছিলাম ওভাবেই হবে। কিন্তু কেন জানি সব একটা লুপে আটকানো। ধরেন আপনি একটা ঋণ খেলাপি করা কারোর ব্যবসা বন্ধ করতে চান তারপর দেখবেন সে ব্যবসার সাথে জড়িত প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজারকর্মী। এতগুলো মানুষকে চাকরিহীন করে আপনি দেশের রাজকোষ টিকিয়ে রাখতে পারবেন না। এভাবেই গোষ্ঠীভূত সম্পত্তি আমাদের একটা লুপে ফেলে দিয়েছে।
নয়া দিগন্ত : আন্দোলন নিয়ে আপনার উল্লেখযোগ্য একটা স্মৃতি বলেন।
রাবেয়া : হুম, আহত দেখেছি অনেক। চোখের সামনেই তো সব ঘটে গেলো। সেসব মনে হলে খুবই কষ্ট পাই।
যারা আহত হয়েছিল তারা পরে বেঁচে গিয়েছিল কিনা সেটাও বলতে পারছি না। একজনকে তো দেখেছিলাম তার চোয়াল ভেঙে গিয়েছিল। তো এরকম ঘটনা অনেক আছে।
নয়া দিগন্ত : ৫ আগস্ট (৩৬ জুলাই) কোথায় ছিলেন?
রাবেয়া : বাড্ডা তে ছিলাম। সকাল ৯টার দিকে বের হওয়ার কথা ছিল। প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম কিন্তু নতুন বাজার, কুড়িল, রামপুরা, বনশ্রী, বাড্ডা আর্মি-পুলিশের আওতায় থাকায় বের হতে পারছিলাম না। ওরা গলিতে ঢুকে ঢুকে গুলি করছিল। তারপর যখন শুনলাম টুকটাক মানুষ বের হচ্ছে তখন বের হয়ে গেলাম। তারপর দেখলাম সব বয়সের মানুষ জমায়েত হচ্ছিল। কিন্তু কতক্ষণ পর পর পুলিশের একটা করে ঘাটি ছিল। সেটা ক্রস করে লং মার্চের দিকে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। জাহাঙ্গীরনগর থেকে যাত্রাবাড়ী থেকে উত্তরা থেকে বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবদের মারফত খবর পাচ্ছিলাম কারা মিছিল বের করতে পেরেছে বা কারা পাচ্ছে না সে আপডেট নিচ্ছিলাম। যখন যাত্রাবাড়ীতে খবর পেলাম ওরা মিছিল বের করে ফেলেছে তখন মনে হচ্ছিল যে ওরা যেহেতু বের করে ফেলেছে এদিক থেকেও হবে সম্ভব।
তারপর নতুন বাজার থেকে সবাই আশ্বস্ত করছিল আমরা একটা বড় মিছিল নিয়ে আসছি এত বড় হলে বাড্ডা, বনশ্রী, রামপুরায় ক্রস করা যাবে। তখন এই লম্বা রাস্তার ডানে বামে যতগুলো গলি ছিল সবগুলোতে মানুষে ভর্তি ছিল। সব খেলার মত হচ্ছিল। মেইন রোডে মানুষ আসে, পুলিশ গুলি ছুঁড়ে, সবাই আবার গলিতে গিয়ে লুকায়। কেউ আগে কেউ পিছে এভাবে পরিচিত সবাই এই বড় রাস্তা কভার করেছিলাম।
নয়া দিগন্ত : গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি নিয়ে যদি কিছু বলেন।
রাবেয়া : প্রাপ্তি যে কিচ্ছু নাই তা না। হয়তো অনেকিছু হচ্ছে। প্রত্যাশার পারদ অনেক উপরে ছিল সে তুলনায় প্রাপ্তি কিছু না। এই যে এখন সব রাজনৈতিক দলগুলোকে একসাথে মিটিং করতে দেখি একজনকে আরেকজনের সমাবেশে ডাকতে দেখি, ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যে সবাইকে একমত হতে দেখি তখন ভাল লাগে। মনে হয় কিছুতো একটা হয়েছে। এই মানুষগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলে কিন্তু তারপরও ওরা তো এক রুমে কোনো বিষয়ে আলাপটা করতে পারে। এটা ভালো লাগার জায়গা।
নয়া দিগন্ত : এমন পরিস্থিতিতে কী ভাবছেন তাহলে?
রাবেয়া : অনেক কিছু ভাবছি। কিছু করার উপায় তো নেই। যখন শুনি জুলাই আহত, শহীদদের পরিবারের কষ্টের কথা তখন মনে হয় এই অভ্যুত্থানের সরকারই যদি ওদেরকে নিরাপত্তা, স্বীকৃতি দিতে না পারে পরবর্তী আর কে কী করবে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাই আইন-শৃঙ্খলার অবস্থা দেখলে।
আমি জুলাই পরবর্তী অনেক মাস পুলিশ দেখতে পারতাম না। একবার বাস থেকে নেমে গিয়েছিলাম কারণ পুলিশ উঠেছিল বলে। এখনো নিতে পারি না কষ্ট হয়। হয়তো বা এই পুলিশ ভালো কিন্তু মনে পড়ে কোনো না কোনো পুলিশ তো গুলি ছুড়েছিল, খুন করেছিল। তারা মাফ চায় নাই, বিচারের আওতায়ও আনা হয় নাই।
নয়া দিগন্ত : নতুন বাংলাদেশ কেমন দেখতে চান?
রাবেয়া : আমি মানবিক বাংলাদেশ দেখতে চাই। যেখানে আমরা পরমতসহিষ্ণু হব। নিজেরটা না ভেবে সামনের জনের কথা ভাববো। একে অপরকে সাহায্য করবো। হেসে-খেলে আমাদের বাচ্চারা শিক্ষিত হবে। দেশের জন্য কাজ করবে। কোনো লোভীর মেরে দেয়া টাকার জন্য অব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা নড়বড়ে রাস্তা ভেঙে কেউ মরে যাবে এমন দেশ চাই না।
নয়া দিগন্ত : জুলাই নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
রাবেয়া : এই জুলাই আমাদের সবার। যতটা একজন শহীদের, যতটা একজন সম্মুখ যোদ্ধার, ঠিক ততটাই ওই মায়ের যে আমাকে আন্দোলনের সময় রাস্তায় আম কেটে খাইয়েছিল। এসব স্মৃতি তো ভুলতে পারবো না। এগুলো অনেক প্রেরণা দেয়।
জুলাইতে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমাকে শক্তিশালী হতে হবে অনেক। যেন ক্ষমতাকে প্রশ্ন করার পর কেউ পার পেয়ে যেতে না পারে। তাই আমি দেখছি আর পড়ছি। জুলাইকে টিকিয়ে রাখতে আমাদের কাজ করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যেকোনো প্রয়োজনে আমরা আবারো নামবো।
নয়া দিগন্ত : সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক জায়গা থেকে কী ভাবছেন?
রাবেয়া : আমি চাই সবাই সবার মতামত দিক। সুশীল আপার ক্লাস শ্রেণির নারীবাদী আলাপে গ্রামের ওই অল্প শিক্ষিত বউটাও থাকুক। সে বলুক, সে সমাজে কী কী প্রতিবন্ধকতা ফেস করে। সবাই সবার দুঃখের ভাগীদারি হোক। নইলে কাজ হবে না, পরিবর্তন হবে না।
আরেকটা কথা হলো আমরা বাংলাদেশী যেমন সত্য তেমনি আমার ধর্ম পরিচয় সত্য। কেউ কারোর প্রতিবন্ধকতা না। বিভাজনের নীতি কোনোদিন মঙ্গল আনে না। এটি শুধু সুবিধাবাদীদের সুবিধা করে দেয়। আমাদেরকে এসব নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। এই রক্তে ভাসা জুলাইকে জাগ্রত রাখতে হবে দেশ ও সমাজের প্রয়োজনে।
Leave a Reply