স্বপন কুমার রায়, খুলনা ব্যুরো প্রধান:
২০১৮ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে অপরাজিত বাংলাদেশ। এ সময়ের মধ্যে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে টানা ১০টি ওয়ানডে ম্যাচ জিতেছে টাইগাররা। বুধবার (১৩ই জুলাই) গায়ানায় দশম জয়ের রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ দল। প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেটের জয়ের পর দ্বিতীয়টিতে পায় ৯ উইকেটের জয়। এতে এক ম্যাচ হাতে থাকতেই নিশ্চিত হয় টাইগারদের সিরিজ। এই নিয়ে টানা পঞ্চম সিরিজ জিতল অধিনায়ক তামিম। সে সঙ্গে বাংলাদেশ দল জিতেছে নিজেদের ৩১তম ওয়ানডে সিরিজ।
টাইগারদের সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটির শুরুতে বোলারদের দারুণ বোলিং। স্পিনাররা উইকেট নিলেন নিয়মিত বিরতিতে। এতে স্বাগতিকরা গুটিয়ে যায় অল্প রানে। ছোট্ট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্যাটারদের দেখেশুনে খেলা, ধীরস্থির ব্যাটিং সহজেই জয় বয়ে আনে।
গায়ানার প্রভিডেন্স পার্ক স্টেডিয়ামে ৯ উইকেটের জয় পায় বাংলাদেশ। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সফরকারীদের সামনে ১০৯ রানের লক্ষ্য দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ বল হাতে রেখে বিশাল জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে টাইগাররা।
১০৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে এদিন পরীক্ষাই চালায় বাংলাদেশ। ইনিংস উদ্বোধনে লিটন দাসের জায়গায় আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাকে সঙ্গে নিয়ে ভালোভাবেই দলকে এগিয়ে নেন তামিম ইকবাল। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ৪৫ রান তুলে কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ।
কিন্তু বাজেভাবে নিজের উইকেট দিয়ে আসেন শান্ত। গুদাকেশ মোতির বলে কাউ কর্নার দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন আকিল হোসেনের হাতে। ২ চারে ৩৬ বলে ২০ রান করে আউট হন শান্ত। বাকিটা সময় আর কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ।
লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তামিম। ৬২ বলে ৫০ রান করে তামিম ও ৬ চারে ২৭ বলে ৩২ রান করে অপরাজিত থাকেন লিটন।
প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয়টিতেও শুরু থেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটারদের চাপে রাখেন বোলাররা। প্রথম ওভারে ১ বাউন্ডারি হজম করে মোসাদ্দেক ৫ রান দিলেও দ্বিতীয়টিতে মোস্তাফিজুর রহমান দেন মাত্র ১ রান। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বাংলাদেশ পেতে পারতো সাফল্যও। মিরাজের করা দ্বিতীয় বলে এগিয়ে এসেছিলেন শাই হোপ, কিন্তু আর্ম বল মিস করে যান তিনি। হাতে অনেক সময় থাকলেও স্টাম্পিং করতে পারেননি উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান। পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে, ক্যাচও ছিল; সেটাও নিতে পারেননি তিনি।
পাওয়ার প্লের বাকিটা সময় চাপ ধরে রাখেন বোলাররা, তবে পাননি উইকেটের দেখা। পাওয়ার প্লের ঠিক পরের ওভারে তৃতীয় বলে সাফল্য পান মোসাদ্দেক হোসেন। বলের লাইন বুঝতে ভুল হওয়ায় বোল্ড হন কাইল মেয়ার্স। ৩৬ বলে ১৬ রান করেন তিনি।
দ্বিতীয় সাফল্যের জন্যও খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি বাংলাদেশকে। ১৪তম ওভারের শেষ বলে সামারাহ ব্রুকসকে বোল্ড করেন নাসুম আহমেদ। ১৩ বল খেলে ৫ রান করেই আউট হন এই ক্যারিবীয় ব্যাটার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্কোরকার্ডে আর ৫ রান যোগ করার আগেই শাই হোপের উইকেট নেন নাসুম। জীবন পেয়ে ৪৫ বলে ১৮ রানের বেশি করতে পারেননি হোপ। এক বল পর ০ রানে নিকোলাস পুরানকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট নেন নাসুম। এরপর আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ব্রেন্ডন কিং, আলজেরি জোসেফ ও রোমারিও শেফার্ডকে আউট করেন তিনি। অলআউট হতেও আর বেশি সময় লাগেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ৩৫ ওভারেই অলআউট হয়ে যায় তারা। দলের পক্ষে ২৪ বলে সর্বোচ্চ ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন কিমো পল।
৮ ওভারে ১ মেডেনসহ ২৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১০ ওভার ৪ মেডেনে ১৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন নাসুম আহমেদ।
Leave a Reply