কপোত নবী, নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা, শিবগঞ্জ উপজেলার একাংশ ও সবশেষ গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডালা ইউনিয়নের মহানন্দা নদীর ভাঙ্গনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে কয়েকশ পরিবার।
ইউনিয়নটির দক্ষিণ ইসলামপুর, উত্তর ইসলামপুর ও বালুটুঙ্গি এলাকার প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে কয়েকশো ঘরবাড়ি, গাছ, ফসল নদী ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে। অতিবৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে মহানন্দা নদীতে এ অবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় নদীর তীরবর্তী বাড়িগুলো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। জরুরী ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে এলাকাবাসী বিরাট সমস্যায় পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
১৫ সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে ভাঙ্গন কবলিত ওই এলাকা সরেজমিনে গেলে কয়েকজন বাসিন্দা জানান, প্রতিবছর এ সময় এলাকাবাসীকে চরম ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করেও কোন প্রতিকার পায়নি এলাকাবাসী বলে অভিযোগ করেন।
এলাকার কৃষক রবু জানান, এরই মধ্যে নদীর ভাঙনে আমার বাড়ীসহ ৫/১০ টি বাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আমরা এখন চরম হতাশার মধ্যে দিন পার করছি। আমরা খুব অসহায়। দিন আনি দিন খাই। তাই কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এ নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করার জন্য।
আয়েশা বেগম নামে এক গৃহবধু জানান, নদী ভাঙ্গনে আমাদের বাড়ির ২টি ছাগলসহ প্রায় ৫০ হাজার টাকার মালামাল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে এইক দিনে। রাতে আমরা ঠিকমতো ঘুমাতে পারিনা, কখন যে পানিতে তলিয়ে যাবো এ ভয়ে। আরেক গৃহিণী নাসরিন বেগম ঠিক একই কথা বলেন।
অপরদিকে সাজেদা বেগম নামে এক বৃদ্ধ মহিলা জানান, আমাদের যেন দেখার কেউ নেই। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি আমাদের নদী ভাঙন রোধে ঠিকমত বাঁধ নির্মাণ করে দিন। আমরা সাহায্য সহযোগিতা চাই না, আমাদের নদীটাকে বেঁধে দিক এটাই চাই বলে জানান সাজেদা বেগম।
চৌডালা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম বলেন, নদী ভাঙ্গনের কারণে প্রতিবছরই ওই এলাকার মানুষ চরম আতঙ্কের মধ্যে থাকে। মাঝে মধ্যে কিছু জিও ব্যাগ ও বালির বস্তা দিয়ে প্রটেকশন দেয়া হয়। কিন্তু আশানুরূপ না হওয়ায় ভাঙ্গনের ঝুঁকি থেকে যায়।
তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসক মুঞ্জুরুল হাফিজ ইতিমধ্যে ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং তিনি এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারোয়ার জাহান সুজন জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে অতি দ্রুত আমাদের একটি পরিদর্শন দল ভাঙ্গন কবলিত এলাকা গিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দ্রুত ভাঙ্গনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কাজেই অতীতের ভাঙ্গনের কথা স্মরণ রেখে যত দ্রুত পারা যায় মহানন্দা নদী ভাঙন এলাকার পাড় শক্ত মজবুত করে বাঁধাই করার বিকল্প নেই। এটি সম্ভব না হলে সবকিছু নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। সমাজের সূধী মহলও এ বিষয় জোর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
Leave a Reply