নিজস্ব প্রতিবেদক চাঁপাইনবাবগঞ্জ : আঞ্জুমান আরা পারভিন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট মহিলা বিষয়ক অফিসের অফিস সহকারী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে জেঁকে বসে আছেন। অফিসের কর্মকর্তা প্রায় সময় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। পাশের উপজেলার কর্মকর্তাগণ অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন। এ সুবাদে অফিস সহকারী আঞ্জুমান আরা পারভিন বনে যান কর্মকর্তা। অফিসের যাবতীয় কাগজপত্র তার হাতে। নিজের ইচ্ছে মত চালিয়ে যান অফিসের কাজ। তার অনিয়ম দূর্নীতির ব্যাপারে ইতিপূর্বে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগও হয়েছিল। কিন্তু ধূর্ত অফিস সহকারী বাগে নিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তাদের। তার বিরুদ্ধে যায়নি তদন্ত রিপোর্ট। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। ভিজিডি, গর্ভবতী কার্ডের ব্যাপারে অবৈধ্য অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে। মহিলা বিষয়ক অফিসে সেলাইমেশিনের প্রশিক্ষণ নিতে আসা মেয়েদের দিয়ে তার বাড়ীতে কাজ করে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি আইজিএ প্রকল্পের প্রশিক্ষনার্থীদের বিভিন্ন উপকরণ ক্রয়, বাড়ী ভাড়া,পানির বিল, বিদ্যুৎ বিল এমনকি প্রশিক্ষকদের সম্মনি ভাতা প্রদানে অনিয়ম দূর্নীতি করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাড়ী ভাড়া, পানি বিল, বিদ্যুৎ বিল ও গ্যাস বিলের মাষ্টার রোলে প্রথমে কাটপেন্সিল দিয়ে বিল অনুমোদন করে। পরে ঐ মাষ্টাররোলে আবার সরকারের নির্ধারিত বিলের টাকা কলম দিয়ে লিখে অতিরিক্ত অর্থ আত্মসাত করেন। খাতাপত্রে নানা অনিয়ম প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষনার্থীদের সাথে অশালীন আচরণ করলে তারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন। এদিকে প্রশিক্ষক সবুজ আহমেদ তার আইজিএ প্রকল্পের দায়িত্ব বুঝে নিতে তাকে বার বার অনুরোধ করলে তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন অফিস সহকারী এবং দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেয়ার পায়তারা করেন বলে প্রশিক্ষক অভিযোগ করেন। ফলে বিষয়টি কর্মকর্তা বরণ কুমার পালকে জানালে অফিস সহকারীকে দ্রুত প্রশিক্ষক সবুজ আহমেদকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। ফলে,৯ জানুয়ারী তাকে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। অফিস সহকারী আঞ্জুমান আরা পারভিনের নানা অনিয়মে ভরা ফাইলপত্র প্রশিক্ষকের কক্ষে থাকায় দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার ১দিন পর সরকারী ছুটির দিন সুযোগ বুঝে উপজেলার মেডিকেলমোড়ের চাবির মেকারকে বার বার ফোন করে আইজিএ অফিসে ডাকেন। চাবির মেকার ১১ জানুয়ারী বিকেল প্রায় পৌনে ৪টার দিকে অফিসে গিয়ে মূল দরজার তালা ভাঙ্গে পরর্বতী তালা ভাঙ্গার চেষ্টা করলে প্রশিক্ষক সবুজ আহমেদ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ ঘটনায় প্রশিক্ষক হতবম্ভ হয়ে পড়েন। মেকারকে তালা ভাঙ্গার কারণ জানাতে চাইলে তিনি জানান মহিলা বিষয়ক অফিসের আঞ্জুমান আরা পারভিন তাকে বার বার ফোন করে তালা ভাঙ্গার কথা বলেছেন। এ সব তালার চাবি হারিয়ে দিয়েছে বলে বার বার ফোন দিয়ে ডেকে তালা ভাঙ্গার অনুরোধ করায় তিনি সেখানে গিয়েছেন। এ ঘটনায় প্রশিক্ষক সবুজ আহমেদ জানান, তালা ভাঙ্গার বিষয়টি রহস্যজনক হওয়ায় দ্রুত উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, উপ-পরিচালকসহ বিভিন্ন কর্মকর্তাকে অবিহিত করেন। তিনি জানান, তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার মাত্র ১ দিন পর অফিসের আলমারী ও দরজার তালা ভাঙ্গার বিষয়টি রহস্যজনক। ফলে তিনি নিজে বাদি হয়ে ভোলাহাট থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। জিডি নং- ৪১২ তারিখ ১২ জানুয়ারী। সবুজ আহমেদ বলেন, বিদ্যুৎ বিল, পানি বিল, গ্যাস বিল, বাড়ী ভাড়াসহ বিভিন্ন আর্থিক ব্যাপারে অনিয়ম দূর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের বিষয় থাকায় অফিস থেকে কাগজপত্র চুরির উদ্দেশ্য ছিলো বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, কাগজপত্র চুরি করে তাকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে এ ঘটনা ঘটাতে পারে বলে তার ধারনা। এ ব্যাপারে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা বরুণ কুমার পাল বলেন, আঞ্জুমান আরা পারভিন যে ঘটনা ঘটিয়েছেন তার জন্য তিনি তাকে শোকজ নোটিশ দিয়েছেন বলে জানান। একই বিষয়ে ১৬ জানুয়ারী উপজেলা আইনশৃংখলা সভায় উপস্থিত বরুন কুমার পালকে সভার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিবুল আলম তার অফিসের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি শোকজ নোটিশ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ ব্যাপারে আঞ্জুমান আরা পারভিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন তাকে ফাঁশাতে একটি চক্র এ সব করছে। উল্লেখ্য মহিলা বিষয়ক অফিসের বিভিন্ন সভা আনুষ্ঠানিক ভাবে না করেই অফিসে অফিসে গিয়ে সভার সদস্যগণ বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তাগণের স্বাক্ষর করে নিয়ে আসেন। তার দৌরাত্মে অতিষ্ঠ অফিসের অন্যান্য কর্মচারিগণ ও প্রশিক্ষনার্থীগণ। তার ব্যাপারে অভিযোগের যে পাহাড় জমেছে সরজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী করেছেন ভূক্তভূগিরা।-কপোত নবী।
Leave a Reply