নিজেদের মৃত শিশুকে দাফন করতে সমাধিক্ষেত্রে গিয়েছিলেন এক ভারতীয় দম্পতি। জন্ম নেয়ার কয়েক মিনিট পরেই মারা গিয়েছিল নবজাতকটি।
গার্ডিয়ানের খবের বলা হয়েছে, শিশুটিকে দাফন করতে তারা মাটি খুঁড়ে ছোট্ট একটি গর্ত করেন। তখন তাদের কোদাল শক্ত কিছুতে আঘাত করে।
এরপর ভালো করে তাকিয়ে দেখতে পান, একটি মাটির পাত্রের ভেতর একটি শিশু কাঁদছে। গত বুধবার ভারতের উত্তর প্রদেশে এই ঘটনাটি ঘটেছে।
জীবন্ত কবর দেয়া শিশুটির বয়স দুই কিংবা তিন দিনের বেশি হবে না বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হিতেশ শিরোহী নামের ওই ব্যক্তি বলেন, প্রথমে ভেবেছিলাম, আমাদের শিশু প্রাণ ফিরে পেয়েছে। কিন্তু কান্নার আওয়াজ মাটির পাত্রের ভেতর থেকে আসছিল। তখন আমাদের হুশ ফেরে।
শিশুটিকে উদ্ধার করে সাহায্যের জন্য তড়িঘড়ি করে পুলিশে ফোন দেন তিনি। পরে হাসপাতালে নিয়ে সেটিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। চিকিৎসা কর্মকর্তা আলকা সেগারনা সিএনএনকে বলেন, তার শ্বাসপ্রশ্বাসঘটিত সমস্যা দেখা দিয়েছে। সংক্রমণও হয়েছে। ওজন কমে গেছে।
‘আমরা শিশুটির বাবা-মাকে খুঁজছি। এই ঘটনায় তারা জড়িত,’ জানালেন পুলিশ সুপারইনটেনডেন্ট অভিনন্দন সিং। ‘তারা জড়িত না থাকলে এমন ঘটনা ঘটা অসম্ভব।’
তিনি বলেন, সন্দেহভাজনকে খুঁজে বের করতে পুলিশের একটি দল মোতায়েন করা হয়েছে। সাদা পোশাকের সদস্যরাও সক্রিয় রয়েছেন।
অপরাধীকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করার প্রতিশ্রুতির কথা জানিয়েছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ভারতে শিশুহত্যার প্রবণতার বিষয়টিই সামনে নিয়ে এসেছে। পুত্র সন্তান না হওয়ায় কন্যাশিশুকে হত্যার ঘটনা অহরহ ঘটছে দেশটিতে।
উত্তরাধিকার ও অর্থনৈতিক বিষয়আশয় বিবেচনায় নিয়ে সন্তান হন্তারক হয়ে যান বাবা-মা। কন্যাশিশুকে সংসারের বোঝা হিসেবে মনে করা হয়।
২০১৭-১৮ সালের এক অর্থনৈতিক জরিপ বলছে, বাবা-মা ছেলে সন্তানের অনুরক্ত হওয়ায় ভারতে ব্যাপক লিঙ্গ ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে। নারী ভ্রুণ হত্যার ঘটনাও ব্যাপক।
এমনকি লিঙ্গ শনাক্তকরণের পদ্ধতি ব্যবহারের সুযোগ না থাকলে ছেলে না হওয়া পর্যন্ত সন্তান নিতে থাকে পরিবারগুলো।
সূত্র: যুগান্তর
Leave a Reply