বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের ‘প্যাকেজ কর্মসূচি’ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
শনিবার সন্ধা সাড়ে সাতটায় গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
শনিবার বিকেল ৫টায় দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির নিয়মিত বৈঠক শুরু হয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ছাড়াও বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সভায় অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্যে চলমান আন্দোলনকে আরো বেগবান করার জন্যে এবং অন্যান্য আইনত ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’
কবে নাগাদ আন্দোলনের কর্মসূচি আসবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। আগামী চার সাপ্তাহের মধ্যেই এই কর্মসূচিগুলো আসবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও বরগুনায় রিফাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়।
বরগুনার রিফাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সভায় রিফাত হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়েছে। সাম্প্রতিককালে এই ধরনের হত্যাকাণ্ড আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা সরকারের ব্যর্থতা ও উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছে বলে মনে করে। যেহেতু এই সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়, ফলে কোনো জবাবদিহিতা নেই। সেজন্য রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে বিগত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন সন্ত্রাস ও অস্ত্রের মুখে জনগণের অধিকার হরণ করেছে সেহেতু রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের আস্থা হারিয়ে যাচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ক্রমান্বয়ে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে চলেছে এবং একটা চরম অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সমাজিক সংকট বিরাজ করছে দেশে। সভা মনে করে, এই সংকট নিরসনের একমাত্র উপায় হচ্ছে, যিনি সারা জীবন গণতন্ত্রের লড়াই করেছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক কারনে যে সমস্ত নেতা-কর্মীদের বন্দি করে রাখা হয়েছে তাদের মুক্তি এবং অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগনের সংসদ গঠন করা।’
বয়সসীমা তুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের আন্দোলনে সৃষ্ট সংকট সমাধানে কী করা হয়েছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এগুলোর বিষয়ে যাদের দায়িত্ব রয়েছে তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। ছাত্রদলের ব্যাপারে যাদের দায়িত্ব আছে তারাই পরবর্তিতে আপনাদেরকে জানাবেন।’
মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক মরহুম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উনি এই ধরনের কথা প্রায়ই বলেন, এই ধরনের কথা আগেও বলেছেন। আমরা মনে করি যে, তাদের যে রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা এসব তারই বহিঃপ্রকাশ।’
তিনি আরো বলেন,‘আমি মনে করি, এই ধরনের চিন্তা করাও রাজনৈতিক কোনো চিন্তা বলে মনে হয় না।’
Leave a Reply