তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরের মুন্ডুমালা পৌরসভার আলোচিত মেয়র সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে এবার সরকারি অর্থ ব্যয়ে উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে ব্যক্তিগত প্রচারণার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সচেতন নাগরিক মহলে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়, রাজনৈতিক মহলেও দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। অন্যদিকে বিক্ষুব্ধ পৌরবাসির তোপের মুখে মেয়র সাইদুর রহমান রাঁতের আঁধারে তার প্রতিকৃতি সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে পৌরবাসী মনে করছে। স্থানীয়রা জানান, মুন্ডুমালা পৌর এলাকায় প্রায় কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধু চত্ত্বর ও আরসিসি রাস্তা নির্মাণ করা হয়। এদিকে এসব উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ফলকে আওয়ামী লীগের দলীয় স্রোগান, বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের উন্নয়নের কোনো কথা উল্লেখ না করে মেয়র সাইদুর রহমান তার ব্যক্তিগত প্রতিকৃতি ব্যবহার করায় নাগরিক ও রাজনৈতিক মহলে এসব ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পৌরবাসীর মতামত উপেক্ষা ও কামিল মাদরাসার জায়গা দখল করে জোর করে বঙ্গবন্ধু চত্ত্বর নির্মাণ করেছেন মেয়র সাইদুর। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় কোটি টাকা। অন্যদিকে মুন্ডুমালা বাগমারাপাড়া মহল্লায় বিরোধপুর্ণ সম্পত্তিতে আরসিসি রাস্তা নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় কোটি টাকা। এদিকে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে এই দুটি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু উদ্বোধনী ফলকে সরকারের উন্নয়ন, দলীয় স্লোগান, বঙ্গবন্ধু বা প্রধানমন্ত্রীর কোনো প্রতিকৃতি না দিয়ে মেয়র সাইদুর রহমান তার ব্যক্তিগত প্রতিকৃতি ব্যবহার করেছেন। ওদিকে বিষয়টি নজরে আসলে উপস্থিত নেতাকর্মী ও নাগরিকগণ বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
অন্যদিকে এর আগেও মেয়র সাইদুর রহমান গণশুনানী না করে একক ক্ষমতা বলে উচ্চ হারে পৌর কর বর্ধিত করেন এবং পৌরসভায় কোনো নাগরিক সেবা নিতে গেলে আগেই বাধ্যতামুলক ভাবে বর্ধিত কর আদায় করা হয়। এতে পৌরবাসী ফুঁসে উঠে তাকে নিয়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। এমনকি এ ঘটনায় পৌরবাসী স্মরণকালের সর্ববৃহত মানববন্ধন ও বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপিও দিয়েছেন। এছাড়াও প্রতিবন্ধী নেতা শামসুল আলমকে হত্যার চেষ্টা করে মামলার আসামি হয়েছেন এবং তার কক্সবাজার ভ্রমণ নিয়েও মুখরোচক নানা গুঞ্জন রয়েছে। এবিষয়ে মুন্ডুমালা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন আমিন বলেন,এরা উড়ে এসে জুড়ে বসা আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগের আদর্শিক নেতাকর্মীরা কখনো আওয়ামী লীগের স্লোগান ভুলে যায় না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার অর্থায়নে উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে, অথচ এসব উন্নয়নের স্মৃতি ফলকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি বা জাতীয় স্লোগান না দিয়ে মেয়র নিজের বড় বড় ছবি দিয়ে নিজের নামে প্রচারণা চালাচ্ছেন, জয়বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান টুকু স্মৃতি ফলকে লেখার জয়গা হয়নি। এবিষয়ে মুন্ডুমালা পৌরসভার সচিব আবুল হোসেনের কাছে গোল চত্বর ও আরসিসি রাস্তার উন্নয়ন কাজের বরাদ্দের তথ্য চাইলে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে মেয়রের অনুমতি ছাড়া আমি কিছু বলতে পারবো না। এবিষয়ে জানতে চাইলে মুন্ডুমালা পৌর মেয়র সাইদুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি পৌরসভার মেয়র হিসেবে আমার ছবি দিতেই পারি, এতে কোন সমস্যা নাই।
Leave a Reply