শিরোনাম
রাণীনগরে আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে বিজয় দিবসে জামায়াতের র‍্যালী-বরেন্দ্র নিউজ গোমস্তাপুরে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে গোহালবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির ত্রি-বার্ষিক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিতে আলোচনা সভা-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাট উপজেলা বিএনপি’র ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ গোদাগাড়ীতে ৫০ গ্রাম হিরোইনসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক-বরেন্দ্র নিউজ গোমস্তাপুর ইউনিয়ন বিএনপির ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতের উদ্যোগে দিনব্যাপী শিক্ষা শিবির অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে শিবিরের কুইজ প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ-বরেন্দ্র নিউজ
মহান আল্লাহর পরীক্ষা করোনাভাইরাস-বরেন্দ্র নিউজ

মহান আল্লাহর পরীক্ষা করোনাভাইরাস-বরেন্দ্র নিউজ

বরেন্দ্র নিউজ ডেস্ক :
বর্তমানে পাপ ও পতনের চরমে পৌঁছেও মানব সভ্যতা প্রতি মুহূর্তে নানান বিপর্যয়ের মুখোমুখী। এইডস্, ডেঙ্গু, ইবোলা, নিপা, জিকা, কতো নাম-জাতের রোগেই না আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। তাই গবেষণা ও প্রতিরোধের সব প্রয়াসে ব্যর্থ হয়ে বাঁচার করুণ আর্তিতে দীর্ঘশ্বাস এখন বিশ্বময়।

চীনসহ বিশ্বের দেশে দেশে নতুন আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জারি করেছে সতর্কতা। আসলে মহান আল্লাহ্র পরীক্ষার নাম করোনা ভাইরাস। মহান আল্লাহর শ্রেষ্টতম সৃষ্টি মানুষ যখন আল্লাহ্কে ভুলে যায়, বেপরোয়া হয়ে ওঠে তখনই আল্লাহর গজব নেমে আসে শান্তির পৃথিবীতে:

“ভূমিতে ও পানিতে সব জায়গায়,
লোকজন কুকাজে অশান্তি ছড়ায়
যেরূপ কাজ ওরা থাকে করিতে,
আল্লাহ্ চান তার শাস্তি দিতে…….”
(কাব্যানুবাদ সুরা রূম, আয়াত: ৪১)।

করোনা ভাইরাসের আরেক নাম ২০১৯-এনসিওভি। ভাইরাসটির বহু প্রজাতির মধ্যে বিশেষ ০৭টি মানব দেহে সংক্রমিত হয়। বিজ্ঞানীদের ধারণা, ভাইরাসটি দেহকোষের ভেতর গঠন বদলে শক্তি ও সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারে এবং একজন থেকে আরেকজনের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটিয়ে শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

শরীরে ঢোকার পর ভাইরাসটির লক্ষণ প্রকাশিত হতে সময় লাগে পাঁচ দিন। করোনা সংক্রমণের লক্ষণ জ্বর, শুকনো কাশি, শ্বাস কষ্ট। পরিনামে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হওয়া, নিউমোনিয়া এবং সবশেষ মৃত্যুর প্রহর গণা বা মৃত্যু। চীনের উহান শহরে করোনার প্রাদুর্ভাব। ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ কিভাবে ঘটে ছিল তা নিশ্চিত নয়। তবে সম্ভবত, কোনো প্রাণিজ সামুদ্রিক খাবারের মধ্যে ভাইরাসের উৎস লুকিয়ে আছে অথবা অন্য কোথাও।

বুঝতে হবে আমাদের এই শরীর আমাদের নয়, এটা আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে কিছুদিনের জন্য। তাই করোনার ব্যাপারে হতাশার কারণ নেই, বরং মনে রাখতে হবে পবিত্র কুরআনের অভয়বাণী “আল্লাহ্র রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না” (সুরা ইউসুফ, আয়াত: ৮৭)। মহান আল্লাহ্ কষ্ট দেওয়ার জন্য বা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবার জন্য মানুষকে সৃষ্টি করেননি। বরং মহান আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদেরকে তাঁর কিছু নিদর্শন দেখান, যেন মানুষের বোধোদয় হয়। তিনি বলেন “আমি ভয় দেখানোর জন্যই (তাদের কাছে আযাবের) নিদর্শনসমূহ পাঠাই” (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ৫৯)।

এভাবেই মানুষ কিয়ামতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এপ্রসঙ্গে সতর্ক করে প্রিয়নবী (স.) বলেন “……..সে সময় তোমরা অপেক্ষা করো: রক্তিম বর্ণের ঝড়ের (এসিড বৃষ্টি) ভূ-কম্পনের, ভূমিধ্বসের, রূপ বিকৃতির (লিঙ্গ পরিবর্তন) পাথর বৃষ্টির এবং সূতোছেড়া (তাসবিহ্) দানার ন্যায় একটির পর একটি নিদর্শনসমূহের জন্য” (তিরমিযি)।

তবে কোনো রোগেই মু’মিনের হতাশ হওয়া উচিত নয়। প্রিয়নবী (স.) বলেন “নিশ্চয়ই আল্লাহ্ রোগ ও চিকিৎসা দু’ই পাঠিয়ে দেন….. সুতরাং চিকিৎসা গ্রহণ কর” (আবু দাউদ)। ইবনু আব্বাস (রা.) বর্ণিত ‘একদা ইব্রাহিম (আ.) জিজ্ঞেস করলেন: হে আমার প্রতিপালক রোগ কার পক্ষ থেকে? আল্লাহ্ বলেন “আমার পক্ষ থেকে”! জানতে চাইলেন ঔষধ কার পক্ষ থেকে? জবাব এলো “আমার পক্ষ থেকে” আবার জানতে চাইলেন তবে চিকিৎসক? জবাব এলো “চিকিৎসকের মাধ্যমে ঔষধ পাঠানো হয়….”।

মানব সভ্যতায় অনাচার অশ্লীলতার বৃদ্ধির ফলে নেমে আসছে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। প্রিয়নবী (স.) বলেন “যখন কোনো জাতির মধ্যে অশ্লীলতা প্রকাশ্যভাবে চলতে থাকে, তখন তাদের মধ্যে প্লেগ এবং এমন অভিনব দুরারোগ্য ব্যাধি দেওয়া হয়, যা তাদের পূর্বপুরুষেরা কখনো শোনেনি” দায়লামি। করোনা প্রসঙ্গে আজো প্রিয়নবীর (স.) বাণী তাৎপর্যপূর্ণ।

রোগ-শোকের মাধ্যমে মু’মিনকে পরীক্ষা করা হয়, এতে তার ঈমানিশক্তি বৃদ্ধি পায়। রোগের মধ্যেও পাওয়া যায় কল্যাণের বার্তা। যেমন:

একদা প্রিয়নবী (স.) হযরত আবু হুরাইরাকে (রা.) সঙ্গে নিয়ে জ্বরের রোগী দেখতে যান। তিনি (স.) বলেন “সুসংবাদ গ্রহণ করো। আল্লাহ্ বলেন, ‘আমার আগুন দুনিয়াতে আমি আমার মু’মিন বান্দার ওপর প্রবল করি, যেন তা আখিরাতের আগুনের বিনিময় হয়ে যায়’” (তিরমিযি)।

ইবনু উমর (রা.) বর্ণিত অন্য এক হাদিসে আছে, প্রিয়নবী (স.) বলেন “জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে হয়। কাজেই তাকে পানি দিয়ে নিভাও”।

আসমা বিনতে আবু বকর (রা.) বলতেন ‘রাসুল (স.) আমাদের নির্দেশ করতেন, আমরা যেন পানির সাহায্যে জ্বরকে ঠান্ডা করি’ (মুসলিম শরিফ)।

জানা যায়, করোনার নেই প্রতিষেধক, নেই চিকিৎসাও, তবে চলছে গবেষণা ও প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ হাত ভালোভাবে ধোয়া, ঠান্ডা ও ফ্লু আক্রান্তদের থেকে দূরে থাকা এবং মুখে মুখোশ পরা।

হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. গ্যাব্রিয়েল লিউং বলেন ‘হাত সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, বারবার হাত ধুতে হবে। হাত দিয়ে নাক বা মুখ ঘষবেন না, ঘরের বাইরে গেলে মুখোশ পরতে হবে’। ড. গ্যাব্রিয়েল লিউং আরও বলেন ‘আপনি যদি অসুস্থ হয়ে থাকেন তাহলে মুখোশ পরুন, নিজে অসুস্থ না হলেও, অপরের সংস্পর্শ এড়াতে মুখোশ পরুন’।

স্বাস্থ্য, চিকিৎসার গুরুত্ব প্রসঙ্গে হাদিসের প্রায় সব গ্রন্থেই আছে ‘কিতাবুত তিব’ বা চিকিৎসা অধ্যায়। ইসলামের সোনালি অধ্যায়ে ‘তিব্বে নবী’ (স.) নামে আলাদা শাস্ত্র গড়ে উঠে ছিল। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের শ্লোগান ঢ়ৎবাবহঃরড়হ রং নবঃঃবৎ ঃযধহ পঁৎব এজন্যই যেসব জিনিসের কারণে অসুস্থতা তৈরী হয় ইসলামে তা নিষিদ্ধ। রোগের পেছনে অন্যতম কারণ অবহেলা অপরিচ্ছন্নতা। ইসলামে পরিচ্ছন্ন জীবনবোধের জন্যই রয়েছে অজু গোসলের বিধান। হাদিসের শিক্ষা ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ’।

ইসলাম সবসময় একটি সুস্থ-সক্ষম মানবগোষ্ঠীর ধারণা দেয়। তাই বর্তমানেও সব রোগের প্রতিকার, প্রতিরোধ সম্পর্কে আমরা সঠিক ধারণা পেতে পারি পবিত্র কুরআন থেকে। মহান আল্লাহ্ বলেন “আমি কুরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা মু’মিনদের জন্য আরোগ্য ও রহমত” (সুরা বানী ইসরাইল, আয়াত: ৮২)।

সাম্প্রতিক কালের রোগ-শোক করোনা, জিকা, নিপা ভাইরাসসহ সব রোগ থেকে মহান আল্লাহ্র রহমত ছাড়া আরোগ্যলাভ অসম্ভব। এজন্যই পবিত্র কুরআনে আছে, মহান আল্লাহ্র পরিচয় প্রসঙ্গে হযরত ইব্রাহিম (আ.) বলেন “ওয়া ইযা মারিয্তু ফাহুয়া ইয়াশ্ফিন” অর্থাৎ ‘যখন আমি অসুস্থ হই তখন তিনিই আমাকে সুস্থতা দান করেন’ (সুরা শু’আরা, আয়াত: ৮০)।

শুধু তাই নয়, যে কোনো মহাবিপদ থেকে একমাত্র উদ্ধারকারী ও রক্ষাকারী মহান আল্লাহ্। এজন্যই পবিত্র কুরআনে উদ্ধৃত একটি মুনাজাত: রাব্বি ইন্নি লিমা আন্যালতা ইলাই-য়া মিন খাইরিন ফাকির অর্থাৎ

‘হে প্রভু।
যেটা দয়া করবেন মোরে,
সেটাই চাই আমি নিজের তরে’
(কাব্যানুবাদ, সুরা কাসাস, আয়াত: ২৪)।

অপর আয়াতে আছে লা- ইলাহা ইল্লা আন্তা সুব্হানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ-জ্বয়ালিমিন অর্থাৎ ‘তুমি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, সব পবিত্রতা তোমারই- আমি তো গোনাহ্গার’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ৮৭)। দোয়াটি কবুলের সুসংবাদ দিয়ে মহান আল্লাহ্ জানালেন “…এভাবেই আমি বিশ্বাসীদেরকে মুক্ত করে থাকি”। (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৮৮)।

অন্যদিকে মহান আল্লাহ্র শাহি দরবারে প্রিয়নবীর (স.) মুনাজাত ছিল “হে আল্লাহ্ আমি তোমার কাছে সুস্বাস্থ্য কামনা করি….” (বায়হাকি)

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




<figure class=”wp-block-image size-large”><img src=”http://borendronews.com/wp-content/uploads/2020/07/83801531_943884642673476_894154174608965632_n-1-1024×512.jpg” alt=”” class=”wp-image-17497″/></figure>

© All rights reserved © 2019 borendronews.com
Design BY LATEST IT