মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: বিজ্ঞানী জগদিশ চন্দ্র বসু বলেছেন “গাছেরও জীবন আছে” কিন্তু এই কথার প্রাধান্য না দিয়ে নওগাঁর সাপাহার সদর সহ আশ-পাশের বিভিন্ন গাছগুলোতে লোহার পেরেক মেরে লাগানো হচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পণ্যের বিজ্ঞাপনের ফেস্টুন, ব্যানার ও সাইনবোর্ড। যাতে করে সড়কের গাছগুলো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। মরে যেতে বসেছে অনেক পুরনো গাছ।
সম্প্রতি উপজেলার খঞ্জনপুর, নিশ্চিন্তপুর, নতুন বাসস্ট্যন্ড সহ সদরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কের পাশের গাছে গাছে ঝুলছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রচারণার অসংখ্য ফেস্টুন। আর সেই ফেস্টুনগুলো পেরেক দিয়ে গাছে আটকানো হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন কোচিং সেন্টার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, চিকিৎসক, বিভিন্ন পণ্য সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের, ক্লিনিক ও ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারের অসংখ্য ফেস্টুন ও সাইনবোর্ড। পিছিয়ে নেই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং সেন্টারগুলে ও সুন্নতে খাৎনার বিজ্ঞাপন। শুধু তাই নয়, খোদ উপজেলা পরিষদের সামনে বিশালাকার গাছটিতে ব্যক্তি বিশেষের নানান শুভেচ্ছা ফেস্টুনে সয়লাব হয়ে পড়েছে গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গাছে পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয়, তা দিয়ে পানি ও এর সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও অণুজীব ঢোকে। এতে গাছের ওই জায়গায় পচন ধরে। ফলে তার খাদ্য ও পানি শোষণপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। একসময় গাছটি মরে যায়।
বিজ্ঞানী জগদিশ চন্দ্রের ভাষ্য মতে গাছের প্রাণ আছে, আছে অনুভূতি শক্তিও। গাছ শ্বাসের সাথে কার্বনডাই অক্সাইড গ্রহন করে এবং শ্বাস ত্যাগ করে অক্সিজেন দিয়ে। আর এ অক্সিজেন ছাড়া মানুষের বেঁচে থাকার কোন রাস্তা নেই! গাছের অনুভূতি শক্তি থাকলেও নেই বাকশক্তি। যার জন্য হয়তো তার ব্যথাটা আমাদের বলতে পারেনা। এক্ষেত্রে গাছের এতবড় উপকারের প্রতিদান আমরা পেরেক মেরে দিচ্ছি! এমতাবস্থায় আমাদের নিজ বিবেককে জাগ্রত করা দরকার। আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক।
এলাকার বিভিন্ন মহল বলছেন, সদরে অবস্থিত এই পুরনো গাছগুলোতে এভাবে ফেস্টুন বা পোষ্টার মারা হলে একসময় গাছগুলো মরে যাবে। যাতে করে যেমন অক্সিজেন ঘাটতি হবে তেমনি ভাবে পুরনো ঐতিহ্যগুলোও হয়তো ম্লান হয়ে যাবে।
বিষয়টি নিয়ে সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি নিরসন করা হবে।
Leave a Reply