অনলাইন ডেস্ক:
বাংলাদেশে বছরে যে পরিমাণ খাদ্যশস্য ইঁদুর নষ্ট করছে তা দিয়ে ৫৪ লাখ মানুষের খাবারের সংস্থান হতো।
রোববার শেরপুরের খামারবাড়ির প্রশিক্ষণ হলে ‘আসুন, সম্পদ ও ফসল রক্ষায় সম্মিলিতভাবে ইঁদুর নিধন করি’ প্রতিপাদ্য বিষয়ে এক আলোচনাসভায় এ সব তথ্য তুলে ধরা হয়।
পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে ইঁদুর নিধনের কারণ ও কলাকৌশল সম্পর্কে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শস্য সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ মো. আক্তারুজ্জামান।
ইঁদুরের প্রতীকী মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী ইঁদুর নিধন অভিযান উদ্বোধন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব এ অভিযান উদ্বোধন করেন।
এতে বলা হয়, প্রতিবছর ইঁদুরের আক্রমণে বাংলাদেশে প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টন খাদ্যশস্য নষ্ট হয়। প্রতিবছর যে পরিমাণ খাবার ইঁদুর নষ্ট করে তা দিয়ে ৫০ থেকে ৫৪ লাখ লোকের খাবারের সংস্থান করা সম্ভব।
ইঁদুর ছোট প্রাণী হলেও এর ক্ষতির ব্যাপকতা অনেক। কৃষকের উৎপাদিত ফসলের একটি বড় অংশ ইঁদুর নষ্ট করে। আমাদের দেশে ইঁদুরের কারণে প্রতিবছর দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়।
এটি মানব স্বাস্থ্যের জন্যও হুমকিস্বরূপ। এর মল-মূত্র ও লোম খাবারের সঙ্গে মিশে টাইফয়েড, জন্ডিস, চর্মরোগ, প্লেগ, কৃমিসহ ৬০ প্রকারের মারত্মক রোগ ছড়ায়। এ ছাড়া সেচ-নালা, কাপড়, আসবাবপত্র, বৈদ্যুতিক ও টেলিফোনের তার, রাস্তা কেটে নষ্ট করে।
একজোড়া ইঁদুর বছরের অন্তত ১২ কেজি খাবার নষ্ট করে। প্রতিবছর শেরপুরে ইঁদুর যে পরিমাণ খাদ্যশস্য নষ্ট করে তা দিয়ে জেলার অধিবাসীদের পর্যাপ্ত খাবারের যোগান দেয়া সম্ভব।
শেরপুর খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আশরাফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বক্তব্য রাখেন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল আমুন, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পিকন কুমার সাহা, ইঁদুর নিধনে পুরস্কারপ্রাপ্ত ফুলপুরের কৃষক ক্বারি ফজলুল হক আকন্দ, কৃষক কবি নকলার আব্দুল হালিম, স্থানীয়ভাবে ইঁদুর নিধন প্রযুক্তি উদ্ভাবক সুলতান মাহমুদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, কৃষক-কৃষাণীসহ শতাধিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
পরে ফাঁদে বন্দি করা একটি ইঁদুরকে বালতি ভর্তি পানিতে চুবিয়ে ইঁদুরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
Leave a Reply