শিরোনাম
রাণীনগরে আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার-বরেন্দ্র নিউজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলি বাংলাদেশি যুবক আহত -বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাট সদর ইউপির শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে ইউএনওর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-বরেন্দ্র নিউজ সাপাহারে ফসলী জমি কেটে নির্ধারিত স্থানে পানির লাইন না বসিয়ে অর্থের বিনিময়ে অন্য স্থানে বসানোর অভিযোগ-বরেন্দ্র নিউজ বাংলাদেশকে জুলুম অত্যাচার হাত থেকে রক্ষা করতে ইসলামী রাষ্ট্রের বিকল্প নেই-অধ্যাপক মুজিবুর রহমান খুলনার দাকোপ ছাত্র লীগের জন্মদিন পালনে আটক-৩-বরেন্দ্র নিউজ সাপাহারে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পেইনে অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ গণ অধিকার পরিষদের কুড়িগ্রাম জেলা কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন-বরেদ্র নিউজ সীমান্তবর্তী উপজেলা ডিমলায় শতাধিক এতিম শিশুকে ইউএনওর কম্বল উপহার-বরেন্দ্র নিউজ সাপাহারে ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সভা-বরেন্দ্র নিউজ
কুড়িগ্রামে এক টাকার রেস্টুরেন্ট!-বরেন্দ্র নিউজ

কুড়িগ্রামে এক টাকার রেস্টুরেন্ট!-বরেন্দ্র নিউজ


সাইফুর রহমান শামীম,, কুড়িগ্রাম।
দারিদ্রপীড়িত জেলা কুড়িগ্রামে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এবার চালু হলো এক টাকার রেস্টুরেন্ট। এক টাকায় শহরের রেস্টুরেন্টের খাবার পেয়ে খুশি হতদরিদ্র মানুষেরা।
দেশের প্রেক্ষাপটে বাজারে এক টাকা এখন নেহাত মূল্যহীন। প্রায় বিলুপ্তির পথে এক টাকার নোট। দোকানিরা এর চাহিদা সারেন চকলেট দিয়েই। কিন্তু এক টাকায় রেস্টুরেন্টের খাবার অবিশ্বাস্য। সত্যি এমন ব্যতিক্রম আয়োজন করেছে স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। দারিদ্রপীড়িত কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চরসুভারকুঠি গ্রামে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্থায়ীভাবে বিশেষ একটি রেস্টুরেন্ট চালু হয়েছে। এক টাকার এই রেস্টুরেন্টে পাওয়া যাচ্ছে বিরায়ানী,পোলাও,ভাত,মাছ,মাংস,ডিমসহ বারো পদের খাবার। যা ক্ষুধার্ত মানুষেরা রেস্টুরেন্টে গিয়ে ইচ্ছা মতো তাদের পছন্দের খাবার খেতে পারছেন। মনোরম ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসে তৃপ্তি সহকারে পছন্দের খাবার খেতে পেরে খুশি সুবিধাভোগীরা। দ্রব্যমূল্যের এমন উর্দ্ধগতির বাজারে সমাজে এমন অনেক অসহায়,দরিদ্র এবং গৃহহীন মানুষ তিনবেলা খাওয়া কষ্টকর। সেখানে শহরের রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই না। কিন্তু এক টাকার বিনিময়ে পেট পুড়ে খেতে পেরে খুশি প্রত্যন্ত অ লের হতদিরদ্র এসব মানুষ। বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের আধুনিক ঘরোয়ানা এই রেস্টুরেন্টটি নিশ্চিত করেছে খাবার খাওয়ার এক মনোরম এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ। যেখানে রয়েছে পেশাদার বাবুর্চি,রেস্টুরেন্ট স্টাফ,মেন্যু কার্ড এবং বাহারি সব পুষ্টিকর খাবার। রেস্টুরেন্টটিতে ৫০জন মানুষের বসে খেতে পারবে। আর একদিনে ৫শতাধিক মানুষ খাবার আয়োজন করা হয়েছে।
বিনা পয়সা না খেয়ে টাকার বিনিময়ে খেতে পেরে আত্মসম্মানবোধ এবং আত্মতৃপ্তি মুখের হাসি বড় পাওয়ায়। বর্তমানে সপ্তাহে দুই দিন এই রেস্টুরেন্টের কার্যক্রম চলবে। তবে এই কাজে সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে প্রতিদিন এই রেস্টুরেন্ট চালানো সম্ভব। ঢাকা,কক্সবাজারের পর কুড়িগ্রামে চালু হলো এক টাকার এই রেস্টুরেন্ট।
সুবিধাভোগী ছকিনা বেগম বলেন,এক টাকার রেস্টুরেন্টে নাতি-নাতনি,বিয়াইন,বোন সহ আসছি। হামরা গ্রামের মানুষ কোন দিন চিন্তা করতে পারি নাই যে রেস্টুরেন্টে বসে খাবার খামো। আজকে এক টাকায় পেট ভরে খেতে পেরে সবাই খুশি হয়েছে।
সুবিধাভোগী সত্তোর উদ্ধোর্ বৃদ্ধা কাশেম আলী বলেন,বাবা মোর বয়স মেলা হইছে। কোন দিন টাকার অভাবে বড় বড় হোটেলে খাবার খেতে পারি নাই। চা-বিস্কুট ৫টাকা দিয়ে খাইছি। এখন জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় সেটাও হয় না। কিন্তু বউসহ এসে এক টাকায় এমন দামী খাবার খেতে পারবো ভাবতেই পারিনি। এক টাকায় মন মতো খেতে পেরে খুব খুশি হয়েছি বাবা।
সুবিধাভোগী বুলবুলি আক্তার বলেন,বাচ্চা নিয়ে এসেছি এক টাকার হোটেলে। ভাত,মাছ,মাংস,ডিম,সালাদ,ফল, মিস্টি খেলাম। কামলা দেয়া সংসারে শহরের হোটেলে গেলে কম করে হলেও ৪/৫শত টাকা খরচ হতো। কিন্তু এখানে এক টাকায় খেতে পেরে স্বপ্নই মনে হচ্ছে।
স্বেচ্ছাসেবক হৃদয় বলেন,আজ জীবনে প্রথমবারের মতো রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের কাজ করছি। সেটিও বিনা পয়সা। এতে করে উপলদ্ধি করতে পারবো যারা নিয়মিত হোটেলে ওয়েটার,বাবুর্চিসহ কর্মচারীদের ঘাম ঝরানো শ্রম। সত্যি আমি বেশ গর্বিত প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের জন্য এমন কষ্ট করতে পেরে।
স্বেচ্ছাসেবক প্রধান আকরুম হোসেন বলেন,বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দরিদ্র, এতিম, অসহায়দের খুজে বের করে তাদের টোকেন দেয়। পরে তারা এসে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সুবিধা নেন।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ প্রধান সালমান খান ইয়াছিন বলেন,বর্তমানে সপ্তাহে দুই দিন এই রেস্টুরেন্টের কার্যক্রম চলবে। তবে এই কাজে সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে প্রতিদিন করার পরিকল্পনা আছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০০ মানুষ এই রেস্টুরেন্ট থেকে সেবা দেয়া সম্ভব। কুড়িগ্রামে এই রেস্টুরেন্ট একটি মডেল মাত্র। দেশের বিভিন্ন দরিদ্র এলাকায় এই ধরনের কার্যক্রম চালু করা গেলে ক্ষুধায় মানুষের কষ্ট থেকে মুক্তির পাশাপাশি পুষ্টিজনিত অভাবের রোগ থেকে মুক্তি মিলবে এই জনপদের মানুষের।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




<figure class=”wp-block-image size-large”><img src=”http://borendronews.com/wp-content/uploads/2020/07/83801531_943884642673476_894154174608965632_n-1-1024×512.jpg” alt=”” class=”wp-image-17497″/></figure>

© All rights reserved © 2019 borendronews.com
Design BY LATEST IT