বরেন্দ্র নিউজ ডেস্ক :
ইতিহাসে দাতা হাজী মুহাম্মদ মহসিনের নাম চিরস্মরণীয় – বিশ্ববরণ্য দানবীর খেতাব পেয়েছিলেন হাজী মুহাম্মদ মহসিন। দানশীলতার কারণে হাজী মহসিন কিংবদন্তীতে পরিণত হয়েছেন। উপমহাদেশের ইতিহাসের এ বিখ্যাত দানবীর হাজী মুহাম্মদ মহসিন ১৭৩২ সালের ৩ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলিতে জন্মগ্রহণ করেন।
দানের ক্ষেত্রে তুলনা অর্থে মানুষ সর্বদা তার দৃষ্টান্ত ব্যবহার করে থাকে। এই সর্বশ্রেষ্ঠ দানবীর পুরো বাঙালি জাতি হিন্দু, মুসলিম সকলের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র।
অঢেল সম্পত্তির মালিক ছিলেন হাজী মহসিন। এসব সম্পদ তিনি দু’হাতে অকাতরে বিলিয়ে গেছেন। মহসিনের পূর্ব পুরুষরা অত্যন্ত ধনী ছিলেন। ইরান থেকে বাংলায় আসা তার বাবা হাজী ফয়জুল্লাহ ছিলেন একজন ধনী জায়গিরদার। মাতা জয়নব খানমেরও হুগলি, যশোর, মুর্শিদাবাদ ও নদীয়ায় বিস্তর জমি ছিল।
তাঁর বোন মন্নুজানের মৃ”ত্যুর পর উত্তরাধিকারী হিসেবে মহসিন বোনের সম্পত্তির মালিক হন। এতো সম্পদের মালিক হয়েও মহসিন ছিলেন খুব ধার্মিক ও নিরহঙ্কারী। তিনি সর্বদা সহজ সরল জীবনযাপন করতেন। তিনি ছিলেন চিরকুমার।
তিনি তার প্রতিষ্ঠিত ইমাম বাড়া প্রাসাদে বাস করতেন না। ইমাম বাড়ির পাশে একটি ছোট কুটিরে বাস করতেন। আর কুরআন শরীফ নকল করে যা পেতেন তা দিয়েই চলতেন। নিজ হাতে রান্না করে অধিনস্তদের নিয়ে বসে খেতেন।
প্রাথমিক পর্যায়ে হাজী মহসিন গৃহশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্জন করেছেন। পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষার জন্য রাজধানী মুর্শিদাবাদ যান। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি দেশ ভ্রমণে বের হন। তিনি মক্কা, মদিনা, কুফা, কারবালা সহ ইরান, ইরাক, আরব, তুরস্ক এমন নানা স্থান সফর করে দীর্ঘ ২৭ বছর পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। শিক্ষানুরাগী এ দানবীর তাঁর অর্থ দিয়ে বহু বিদ্যাপিঠ স্থাপন করে গেছেন।
হুগলিতে ‘হুগলি মহসিন কলেজ’ ও ‘চট্টগ্রামের সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ’ প্রতিষ্ঠার সময় মহসিনের ওয়াকফকৃত অর্থ ব্যবহৃত হয়। তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠে ‘দৌলতপুর মুহসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়’। ১৭৬৯-৭০ সালের সরকারি দলিল অনুযায়ী তৎকালীন দুর্ভিক্ষের সময় তিনি অনেক লঙ্গরখানা স্থাপন করেন এবং সরকারি তহবিলে অর্থ সহায়তা প্রদান করেন।
১৮০৬ সালে তিনি ‘মহসিন ফান্ড নামক তহবিল প্রতিষ্ঠা করেন। এ তহবিল ধর্মীয় কর্মকাণ্ড, পেনশন, বৃত্তি ও দাতব্য কর্মকাণ্ডের জন্য বরাদ্দ করা হয়। ১৮১২ সালে এ ধার্মিক দানবীর হুগলিতে ইন্তেকাল করেন। তাঁকে হুগলির ইমামবাড়ায় দা’ফন করা হয়।
উল্লেখ্য, ইতিহাসে দাতা হাজী মুহাম্মদ মহসিনের নাম চিরস্মরণীয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হলের নাম তাঁর স্মরণে রাখা হয়েছে। ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর ঘাটির নাম বিএনএস হাজী মহসিন। এছাড়াও মহসিন ফান্ডের অর্থে অসংখ্য দরিদ্র ছাত্রদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হয় ভারত ও বাংলাদেশে।
মুসল্লিদের মাঝে বিনামূল্যে কোরআন বিতরণ করা হলো পর্তুগালে..
আল কোরআন মেমোরাইজিং সেন্টারের উদ্যোগে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে ফ্রি কোরআন বিতরণ করা হয়েছে বাংলা, ইংরেজি ও আরবী তিন ভাষায় অনুদিত কোরআন শরিফ।
গত শনিবার রাতে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের কাজা দ্য কবিলহা হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত কমিউনিটি ব্যক্তিবর্গের মাঝে পবিত্র আল কোরআন ফ্রি বিতরণ করা হয়।
তাহের আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে মহিউদ্দিন সুমনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেন্ট্রাল মসজিদ লিসবনের ইমাম ও খতিব মাওলানা শেখ ডেভিড মুনির।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন মো: নুরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আল কোরআন একাডেমি লন্ডনের চেয়ারম্যান ড. হাফিজ মুনির উদ্দিন আহমেদ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্যবসায়ী মো: কাজল আহমেদ, লিসবনের প্রবীণ কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব অলিউর রহমান চৌধুরী। আল কোরআন মেমোরাইজিং সেন্টার লিসবন ইন্টারন্যাশনাল কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগী একটি প্রতিষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের বিরতির মাঝে মাঝে ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন লিসবন শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যদরা। অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন, সাজিদ মোহাম্মদ, কামরুল আলী, সফি উল্লাহ মাহমুদ, রাজীব আল মামুন, মোহাম্মদ আসাদ উল্লাহ প্রমুখ।
Leave a Reply