রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মহানগরীর ২১নং ওয়ার্ডের শিরোইল বাস্তুহারা পাড়ার প্রায় ২০০ কোটি টাকার সরকারি ১৮ বিঘা জমি উদ্ধার হলো। এর মাধ্যমে বাস্তুহারাপাড়ায় বসবাসকারী ৭০টি পবিবারের মুখে হাসি ফুটেছে।
বুধবার রাজশাহী জেলার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জজ এবং অর্পিত সম্পত্তি প্রর্ত্যপণ আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আব্দুস সালাম বাস্তুহারাপাড়ার অর্পিত সম্পত্তি মামলায় সরকারের পক্ষের আপিল মনজুর করেছেন। আদালত রায় ঘোষণা করেছেন, বাস্তুহারাপাড়ার জায়গাটি অর্পিত সম্পত্তি। বাদী পক্ষের দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
রায় শোনার পর বাস্তহারা পাড়ায় ছুটে যান রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। বাস্তুহারা পাড়াবাসীর উদ্দেশে মেয়র বলেন, আপনাদের পক্ষ থেকে সরে যেতে আমাকে বিভিন্ন প্রলোভন ও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আমি তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছি। আমার পিতা শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান জনগণের কল্যানে কাজ করে গেছেন। আমিও আপনাদের কল্যানে কাজ করে যাচ্ছি, আপনাদের পাশে ছিলাম, আছি, আগামীতেও থাকবো।
মেয়র আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষে গৃহহীন মানুষকে গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাস্তুহারা পাড়াতে অনেক জায়গা আছে, এখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা গৃহনির্মাণ করে দেওয়া হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় জনগণের পাশে আছে।
এ সময় বাস্তুহারা পাড়াবাসী রাসিক মেয়রের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এ সময় ২১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি তোজাম্মেল হক বাবলু, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, সোহেল রানা, সোহবার হোসেন, তারা, মাসুদ রানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জেলার গোদাগাড়ী আদালতের সহকারী সরকারি কৌসুঁলী এ্যাডভোকেট মো. এজাজুল হক মানু জানান, বাস্তহারা পাড়ার বাসিন্দারা প্রায় ২০০ বছর ধরে সেখানে অর্পিত সম্পত্তি লিজ নিয়ে বসবাস করে আসছে। ২০১৩ সালে জায়গাটি অর্পিত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত ‘ক ’তফসিল ঘোষণা করে সরকার। এরপর ২০১৩ সালেই কাদিরগঞ্জের মঈনউদ্দিন সরকার মনির, রশিদ আকতার, রুনা লায়লা ও রশিদা খাতুন জায়গাটির মালিকা দাবি করে অর্পিত সম্পত্তি তালিকা থেকে অবমুক্ত করতে রাজশাহী জেলার অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন (অর্পিত মামলা নং-১৫৯/২০১৩)। ৬ জুন ২০১৬ তারিখে বাদীপক্ষের পক্ষে (সরকার পক্ষের বিপক্ষে) রায় ঘোষণা করেন আদালত। ৩০ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে সরকার পক্ষে জেলা প্রশাসক, রাজশাহী ওই রায়ের বিরুদ্ধে অর্পিত সম্পত্তি প্রর্ত্যপণ আপিল ট্রাইব্যুনালের আপিল করেন (অর্পিত আপিল মামলা নং-১৪/২০১৬)।
এ্যাডভোকেট মো. এজাজুল হক মানু জানান, ২০ জুন ২০১৮ তারিখে জেলা প্রশাসক, রাজশাহী মহোদয় তাকে মামলাটি পরিচালনার জন্য বিশেষভাবে নিয়োগ প্রদান করেন। এরপর থেকে তিনি মামলাটি পরিচালনা করে আসছিলেন। বুধবার আদালত সরকারপক্ষের অর্পিত আপিল মঞ্জুর করেছেন। আদালত রায় দিয়েছেন, বাস্তহারাপাড়ার জায়গাটি বাদীপক্ষের নয়। সরকারি অর্পিত সম্পত্তি। আদালতে আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। এই রায়ে ২০০ কোটি টাকার সম্পত্তি সরকারের বহাল থাকলো।
তিনি আরো বলেন, মাননীয় মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করেছেন। গাউন পরে মেয়র মহোদয় আদালতে সরকারপক্ষের কৌসুলীর সাথে যুক্ত হয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। প্রতিনিয়ত মামলাটির খোঁজ-খবর নিয়েছেন। মেয়র মহোদয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে সরকারপক্ষ আদালতে ন্যায় বিচার পেয়েছে।
Leave a Reply