মোঃজিল্লুর রহমান চারঘাট,(রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
আজ থেকে সারাদেশে খুলেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ ১৮ মাস পর ক্লাস চালু হলেও রাজশাহীর চারঘাট পৌর এলাকার পিরোজপুর-১ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনির শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হয়েছে গাছতলায়। অন্যদিকে, পঞ্চম শ্রেনির শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হয়েছে পাশের আরেকটি বিদ্যালয়ে গিয়ে।
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) চারঘাটের পিরোজপুর এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে খোজ নিয়ে জানা গেছে, পিরোজপুর-১ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ছিল টিনসেডের একটি বিদ্যালয়। অফিস, স্টোররুম ও শ্রেনিকক্ষ মিলে মোট ৯টি রুম ছিল। কিন্তু বর্তমানে সেখানে মাত্র দুটি রুম রয়েছে। একটিতে দাপ্তরিক কাজ সহ শিক্ষকদের অন্যান্য সম্পন্ন করছেন। অন্যটিতে করা হয়েছে স্টোর রুম। এতে রাখা হয়েছে রড, সিমেন্ট সহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী। এছাড়াও বিদ্যালয়ের মাঠে পড়ে রয়েছে ইট, বালু ও মাটির স্তুপ।
শুধু তাই নয়, শ্রেনিকক্ষ না থাকায় পঞ্চম শ্রেনির ক্লাস নেওয়া হচ্ছে পাশের মেরামতপুর এরশাদ আলী উচ্চবিদ্যালয়ে ক্লাশ রুমে। আর তৃতীয় শ্রেনির ক্লাস নেওয়া হয়েছে খোলা মাঠে গাছ তলায়। সবমিলিয়ে বলা যায়, প্রথম দিনেই ক্লাসে বসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে শিক্ষার্থীরা। এতে অভিভাবকসহ শিক্ষার্থী অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
সূত্র আরও জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে রয়েছে মোট ২৯২ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পঞ্চম শ্রেনিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬০ জন। ক্লাসের প্রথম দিনে উপস্থিত ছিল ৫০ জন, অপরদিকে তৃতীয় শ্রেনিতে রয়েছে ৮০ জন শিক্ষার্থী। তবে ক্লাসে উপস্থিত ছিল ৫৫ জন শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অনেকদিন পর স্কুল খুলেছে। কিন্তু আমরা ক্লাশ রুমে বসতে পারিনি। আজ স্কুলে ক্লাশ হয়নি, শুধু নাম ডেকে হাজিরা নিয়েই ছেড়ে দিয়েছে ম্যাডাম। আবার ক্লাস করেছি গাছ তলায় ইটের খোয়ার ওপর বসে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. মুরাদ আলী বলছেন, করোনার শুরুর দিকেই দোতলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। কথা ছিল ৬ মাসের মধ্যেই কাজ শেষ করে দেবে তারা। কিন্তু দেড় বছরের বেশি অতিক্রম করলেও তারা তা সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হন ঠিকাদার ও শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তর। আর তাই আমাদের বাধ্য হয়েই গাছ তলায় ক্লাস করাতে হয়েছে।
ক্লাস না নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক দিন পর স্কুল খুলেছে। তাই আজ হাজিরা নিয়েই তাদের ক্লাস শেষ করেছি। বাচ্চাদের বাইরে বসিয়ে কষ্ট দেয়নি। তবে পঞ্চম শেনির জন্য পাশের আরেকটি উচ্চবিদ্যালয় থেকে একটি রুম চেয়ে নিয়েছি তাদের ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার জন্য। তবে আশা করছি খুব শীঘ্রই স্টোর রুমটি সারিয়ে তুলে এ সমস্যা কাটিয়ে উঠব।
বিদ্যালয়টির ঠিকাদার লালনকে তার মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করেও তিনি ফোন ধরেননি। একারণে তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে চারঘাট উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার এবিষয়ে বলেন, ‘আমি সকালে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানে প্রধান শিক্ষককে বলেছি অন্তত একটা রুম আপনি তৈরি করুন পাঠদানের জন্য। আর আরেকটি না হয় পাশের উচ্চবিদ্যালয়ে চালিয়ে যান। অন্তত শিক্ষার্থীরা পাঠগ্রহণের পরিবেশ পাবে।’
তিনি যোগ করেন, ‘নির্মাণ কাজের ধীরগতি ও ভবন নির্মানের সমস্যাটি আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলেছি। তারা এবিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাথে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।’
Leave a Reply