তানোর প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরে ভোর থেকেই বৃষ্টি সেই সাথে প্রচন্ড গতিতে ছিল বাতাসের বেগ।ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে পড়ে জনজীবন। ভোর থেকে দুপুর প্রায় ৩টা পর্যন্ত চলে থেমে থেমে বৃষ্টি। দিনভর বয়ে যাচ্ছে বাতাস। বাতাসের গতি ধীরেধীরে কমলেও ঠান্ডায় ঘর থেকে বের হতে পারেন নি কৃষক শ্রমিকরা। রাজশাহীর তানোর উপজেলা জুড়েই আলু ও বোরো ধান সেই সাথে ঘরে উঠতে শুরু করেছে সরিষা। বৃষ্টির পানিতে আলুর তেমন ক্ষতি না হলেও যারা সরিষা তুলছে কিছুটা হলেও অসস্তিতে।তবে এরকম আবহাওয়া কয়েকদিন চলতে থাকলে কিংবা টানা বৃষ্টি হলে আলুর প্রচুর ক্ষতি হবে বলে মনে করছেন চাষিরা।
শ্রমিক মোস্তফা জানান শুক্রবারে আলুর কাজ ছিল। কিন্তু ভোর থেকে বৃষ্টি ও প্রচন্ড বাতাসের কারনে ঘর থেকে বের হতে পারিনি।সারাদিন মেঘলা আকাশ বৃষ্টি থামলেও বাতাসের গতির কারনে প্রচুর ঠান্ডা। এজন্য শ্রমিকরা কাজে যেতে পারেনি। ভুটভুটি চালক ওহাব জানান রিজার্ভ ভাড়া ছিল, কিন্ত বৃষ্টি ও বাতাসের কারনে বাড়ি থেকে বের হতে পারিনি।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের পর থেকে আলু চাষিরা জমি থেকে পানি বের করছেন।বেশির ভাগ মাঠে এমন দৃশ্য দেখা যায়। কামারগাঁ ইউপির মাদারীপুর আলুর জমি থেকে পানি বের করছেন ভবানী পুর গ্রামের আলু চাষি আবুল কাশেম ও আবুল।তারা ১৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। জানতে চাওয়া হয় বৃষ্টিতে কেমন ক্ষতি হতে পারে, তারা জানান শুক্রবার সকালের দিকে যে পরিমান বৃষ্টি হয়েছে তাতে খুব একটা ক্ষতি হবে না।আমরা গত বৃহস্পতিবারে সেচ দিয়েছিলাম এজন্য পানি বের করতে হচ্ছে। পুনরায় বৃষ্টি হলে ক্ষতি হবে।আর যে সব আলুর জমিতে সেচ দেয়নি, তাদের আর সেচ দেওয়া ও পানি বের করা লাগবে না। তবে টানা বৈরি আবহাওয়া বা বৃষ্টি হলে আলু চাষিরা চরমভাবে ধরাশায়ী হবেন।আর রোদ বাতাস হলে জানে বাচবে। চান্দুড়িয়া ইউপির গাগরন্দ গ্রামের আলু চাষি মুসলেম জানান ৩০ বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। গত বৃহস্পতিবার পুরো জমিতে সেচ সার বিষ সব কিছুই দেওয়া হয়েছিল। আর শুক্রবারে বৃষ্টি হওয়ার কারনে সব কিছুই বরবাদ। সকাল থেকে মন প্রচন্ড খারাপ এজন্য বাড়ি থেকেই বের হয়নি।আর এক দু বার বৃষ্টি হলে চরম লোকসানে পড়তে হবে।
আবহাওয়া অফিস জানান, শুক্রবার সকালের দিকে বৃষ্টি হয়েছে এটি শনিবার দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।তবে শুক্রবারে রাত ও শনিবার দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি বাতাস বয়ে যাবে এবং রবিবার থেকে আকাশ পরিস্কার হলেও প্রচন্ড ঠান্ডা পড়বে।
উপজেলা কৃষি অফিসার শামিমুল ইসলাম জানান শুক্রবারের বৃষ্টিতে অনেকের উপকার হয়েছে, আবার অনেককে পানি বের করতে হয়েছে। এতে করে ফসলের কোন ক্ষতি হবেনা। আর এমন আবহাওয়া চলতে থাকলে আলুর কিছুটা ক্ষতি হতে পারে।এবার উপজেলায় আলু চাষের লক্ষমাত্রা ছিল ১২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু চাষ হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার হেক্টরের কাছাকাছি জমিতে । আর আগাম বোরো চাষ হয়েছে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে।
প্রতি শুক্রবার ঐতিহ্য বাহী চৌবাড়িয়া গুরুর হাট বসে।কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারনে আসেনি বেপারিরা।এজন্য লোকসান গুনতে হচ্ছে ইজারাদারদের।
সারোয়ার হোসেন
৪ ফেব্রুয়ারি/২০২২ইং
Leave a Reply