সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম।। পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মাসব্যাপী কম দামে মাছ-মাংস বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন। বর্তমানে প্রতি কেজি মাছ ৮০ টাকা ও গরুর মাংস ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় জেলার ৭২টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভায় নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য পর্যায়ক্রমে এ বিক্রয় কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক দাম সমন্বয় সাপেক্ষে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে কার্প মাছ প্রতি কেজি ৮০ টাকা এবং গরুর মাংস ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রির উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মিনহাজুল ইসলাম। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাসেদুল হাসান, কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজু মোস্তাফিজ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক ফারুক, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ইসমত আরা, যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুরসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
৭০ বছর বয়সী দিনমজুর দেলোয়ার হোসেন জানান, রমজানের এই সপ্তাহে পরিবারের সাত সদস্য এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) ছোট বৈরালি মাছ একশ টাকায় কিনেছেন। আজ আমি খুবই খুশি যে মাত্র ৮0 টাকায় এক কেজি মাছ কিনে পরিবারের সদস্যদের মুখে একটি বড় মাছের স্বাদ দিতে পারছি।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদীর তীরে যাত্রাপুর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার ও গঙ্গাধর নদী প্রবাহিত। এখানে 14-15টি অক্ষর রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে ব্রয়লার মুরগি, মাছ, মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় চর এলাকার নিম্নবিত্ত মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। মাছ-মাংস কেনা অনেকের সাধ্যের বাইরে হয়ে গেছে।
কুড়িগ্রাম জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ যেন রমজান মাসে একটু মাছ-মাংস খেতে পারে সেজন্য এ উদ্যোগ নিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ। জেলার প্রতিটি উপজেলায় রমজান মাসজুড়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কয়েকশ নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে এই মাছ-মাংস বিক্রির ব্যবস্থা করেছে তারা।
গোয়ালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রাশেদুল হক জানান, জেলা প্রশাসনের স্বল্পমূল্যে মাছ-মাংস বিক্রির এই কর্মসূচি তাদের পুরো ইউনিয়নে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
চর যাত্রাপুর গ্রামের জাহেরা খাতুন জানান, তিনি এক কেজি সিলভার কার্প কিনেছেন মাত্র ৮০ টাকায়। কিন্তু বাজারে এসব মাছের দাম প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ২০০ টাকা। আর গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৭২০ টাকায়।
যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে গরিব-দুঃখী মানুষের কাছে ৮০ টাকা কেজি দরে মাছ ও ৬০০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রির উদ্যোগে তার এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষ খুবই খুশি। রমজান মাস উপলক্ষে ভবিষ্যতে ব্রয়লার মুরগির মাংস বিক্রির উদ্যোগ নিলে ভালো হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ জানান, কুড়িগ্রাম জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ যেন রমজান মাসে স্বল্পমূল্যে মাংস ও মাছ খেতে পারে তার জন্য এ ব্যবস্থা । সব উপজেলায় কম দামে মাছ-মাংস বিক্রি হবে।
Leave a Reply