মশিয়ার রহমান (নীলফামারী)।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার একাধিক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম-প্রহরীর ঘুষ না দেওয়া মাসিক বেতন বন্ধ করার অভিযোগ উঠেছে দুই বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম-প্রহরীর বিরুদ্ধে। ওই ১৬ জন কর্মচারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ডিমলা উপজেলার একাধিক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম-প্রহরীর ঘুষ না দেওয়ায় ১৬ কর্মচারীর মাসিক বেতন বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়। অভিযুক্ত ওই দুই দালাল চক্রের সদস্যদের মধ্যে উত্তর তিতপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম-প্রহরী মো. আহসানুল হাবিব ওরফে জুয়েল ও নিজ সুন্দর খাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম-প্রহরী আব্দুল বাছেদ। তারা একে অপরের যোগসাজশে একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম-প্রহরীদের নিকট বিল উত্তোলন করার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসের কথা বলে বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম-প্রহরীদের নিকট ২ শত টাকা দাবি করে।
৬৯ জন দপ্তরী কাম-প্রহরীর মধ্যে যাহারা উক্ত টাকা দুইজন প্রতারকচক্রকে পরিশোধ করেছে তাদের বিলসীটে নাম উঠেছে। কিন্তু আমরা ১৬ জন টাকা দিতে অস্বীকার করায় আমাদের নাম বিলসীটে আসেনি। বিলসীটে নাম না আসায় ঈদকে সামনে রেখে বিল উত্তোলন করতে না পারায় আমাদের পরিবার-পরিজনসহ পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন সন্দিহান হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী হাফিজুর রহমান জানান, সামনে আমাদের ঈদ, যদি বেতন না পাই তাহলে আমাদের পরিবার-পরিজন বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান রয়েছে তাদের নিয়ে ঈদ উদযাপন অসম্ভব হয়ে পড়বে। আমরা তো এই বেতনের উপর নির্ভর করে চলি। আমরা উৎকোচ না দেওয়ায় বিল আটকে রেখেছে উপজেলা শিক্ষা অফিস।
ফরহাদ নামের আরেক ভুক্তভোগী জানান, আমার নিকট আব্দুল বাছেদ ২০০ টাকা ঘুষ চেয়েছে আমি দিতে অস্বীকার করায় তাহারা ও উপজেলা শিক্ষা অফিস আমার বেতন বন্ধ করে দিয়েছে। যাহারা ২শতটাকা দিয়েছে বিল সীটে তাদের নাম এসেছে।
তিনি আরো বলেন, বেতন তুলে পরিবার পরিজনের জন্য ঈদের কেনাকাটা করতে হবে। বছরে দুইটি বড় উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। এই ঈদে যদি বাচ্চাকে ভালো জামা কাপড় কেনাকাটা করে না দিতে পারি তাহলে বাবা হিসেবে ব্যর্থ বলা চলে আমাকে।
এছাড়াও একাধিক ভুক্তভোগী জানান, আমাদের কাছে আব্দুল বাতেন ও আহসানুল হাবিব ওরফে জুয়েল উপজেলা শিক্ষা অফিসের কথা বলে ২শতটাকা ঘুষ চায়। এর মধ্যে ৫৩ জন টাকা দিয়েছে তাদের বিল সীটে নাম এসেছে। আমরা ১৬ জন দেইনি আমাদের নাম বাদ পরে গেছে ফলে বেতন বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা একাধিকবার অফিসে ধর্না দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। সর্বশেষ আমরা উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিইও) স্যার নিকট অভিযোগ দিতে বাধ্য হয়েছি।
অভিযুক্ত চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী (দপ্তরী কাম-প্রহরী) আহসানুল হাবিব ওরফে জুয়েলকে মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আপনি শিক্ষা অফিসে যান, গিয়ে টিইও, এটিইও, বড় বাবু আছে তাদের বলেন। আর যারা আমার কথা বলে তাদের আমার স্কুলে নিয়ে আসেন। বলেই তিনি ফোন কেটে দেন।
ডিমলা উপজেলা শিক্ষা অফিসার নুর মোহম্মাদ জানান, আমি অফিশিয়াল কাজে নীলফামারী রয়েছি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা, তবে আমার অফিসের কেউ যদি জড়িত থেকে থাকে তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply