নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
এক সময়ে পিছিয়ে পড়া অঞ্চল নীলফামারীর জলঢাকা যেখানে মাইলের পর মাইল অনাবাদি প্রতিধ্বনিতে গরু ছাগল চরে বেড়াতো।তামাক চাষের পর কিছু ফসলের কোন চিন্তাও করেনি।সেই অঞ্চলের এক কৃষকের সফলতা সবাইকে তাগ লাগিয়ে দিয়েছে তিনি জাহিদ হাসান। নীলফামারী জলঢাকা উপজেলা মীরগঞ্জ ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী হাতীবান্ধা উপজেলায় গড়ে তুলেছেন আদর্শ সবজি গ্রাম । জাহিদের সফলতা মুগ্ধ করেছে সকলকে, তারা এবার জাহিদের সহযোগিতায় পটলের চাষ করছে।, গ্রামটি যেন সবজির গ্রাম। জাহিদ নিজে সফল হয়ে তার স্বপ্ন সরিয়ে দিয়েছে অন্যদের মাঝে। বিদেশে থেকে দেশে ফেরার পর আর বিদেশে যাননি জাহিদ। দেশেই কিছু একটা করার চিন্তা করেন। শুরু করেন ডিমের ব্যবসা। পরে মুদি সামগ্রীর এজেন্সী নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। পোল্ট্রি খামার ও করেন।কিন্তু কোনটিতেই সফলতা না পেয়ে যখন তিনি হতাশায় ভুগছিলেন এমন সময় কৃষি কাজ করতে মনস্থ করলেন। বছর তিনেক পূর্বে সম্পৃক্ত হন কৃষি কাজের সাথে। আগ্রহী হয়ে ওঠেন সবজি আবাদে। শুরু ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে। মাত্র দেড় বিঘা জমিতে পটল চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। পরবর্তী সময়ে অন্যের জমি লিজ নিয়ে বিস্তার করেছেন সবজি চাষ।জাহিদ হোসেন জানান, পটল চাষ করে সফলতা পেয়েছেন তিনি। বাড়ছে সংসারের স্বচ্ছলতাও। জমির চার পাশে জাল ও তারের বেড়া দিয়েছেন। লিজ নেওয়া জমিগুলোতেও আশানুরূপ সাফল্য পেয়েছেন।পটলের লতা রোপণের পর বাঁশের মাচা তৈরি করে গাছগুলো উঁচু মাচায় তুলে দিয়েছেন। বিঘা প্রতি ৯০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।লতা রোপণের দুই মাস পর থেকেই পটল সংগ্রহ শুরু করেন তিনি। এ পর্যন্ত প্রায় সোয়া ৪ লাখ টাকার পটল বিক্রি করেছেন। জৈব সারের পাশাপাশি সামান্য পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার করেন তিনি।এসব জমি থেকে প্রতিদিন প্রায় ১ মণ পটল উত্তোলন করছেন তিনি। বর্তমানে প্রতি কেজি পটল ৩০ থেকে ৪৫ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করছেন তিনি। পটলের পাশাপাশি তিনি বেগুন, মরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ নানা সবজির চাষ করছেন।তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ বছর পটলের লতায় ত্রিশ হাজার কলম দিবেন তিনি। ইতোমধ্যে দশ হাজার কলমের চারার অর্ডার পেয়েছেন। আরো জমি লিজ নিয়ে এক বিঘায় বেগুন, ১ বিঘায় কলাসহ দুই বিঘা জমিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি আবাদ করেছেন তিনি।এ বিষয়ে জানতে জলঢাকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুমন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানালেন, এ উপজেলায় সবজি চাষ বাড়াতে আমরা কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছি এবং সাথী ফসল ও সবজি চাষের লাভের সম্ভাবনা সম্পর্কে অবহিত করছি।
Leave a Reply