কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।।কুড়িগ্রামে গান পরিবেশনের সময় মঞ্চে গায়ক মাঈনুল আহসান নোবেলের ‘অসংলগ্ন আচরণে’ ক্ষুব্ধ হয়ে জুতা ও পানির বোতল ছুড়েছে দর্শক। আর তাতে পণ্ড হয়েছে ফুলবাড়ি ডিগ্রি কলেজের ৫০ বছর পূর্তি ও সুর্বণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার রাতে কলেজ প্রাঙ্গণে ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত গায়ক নোবেলের রাত ৯টার দিকে গান শুরুর কথা থাকলেও তিনি মঞ্চে ওঠেন ১১টা ২০ মিনিটে। চোখ থেকে চশমা খুলে পাঞ্জাবির কলারে রেখে তিনি বলেন, “দ্বিতীয় বার কুড়িগ্রাম আসলাম। এর আগে এসেছিলাম- তোমাদের সাথে দেখা হয়নি। সুদূর ইন্ডিয়ার বর্ডার লাইনে থেকে গেছিলাম। তোমাদের কারও সাথে দেখা হয়নি। এবার দেখা হল, আলহামদুলিল্লাহ। ”
এরপর “আমার চশমাটা কই” বলে চিৎকার শুরু করেন নোবেল। পরে চশমা পেয়ে চোখে পড়ে ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানটি শুরু করেন।
বেসুরো গলায় গান গাওয়ার ফাঁকে তিনি মাঝেমধ্যেই দর্শকদের উদ্দেশে বলতে থাকেন, সব ফ্ল্যাশ লাইট জ্বলবে।
এক পর্যায়ে তিনি আছড়ে মাইক্রোফোন স্ট্যান্ডটি ভাঙার চেষ্টা করেন। গানের এক পর্যায় অসংলগ্ন আচরণ করতে করতে বসে পড়েন।
তার এমন আচরণের কারণে ক্ষেপে গিয়ে দর্শকরা জুতা ও পানির বোতল ছুড়ে মারে নোবেলের দিকে। পরে স্টেজে থাকা কয়েকজন এবং আয়োজকরা নোবেলকে সরিয়ে নিয়ে যায়।ফুলবাড়ি ডিগ্রি কলেজের ৫০বছর পূর্তি ও সুর্বণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ও কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম রিজু বলেন, “আমরা লজ্জিত। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এ পরিস্থিতির জন্য দায় সংশ্লিষ্ট শিল্পীকে নিতে হবে। মার্জিত সুন্দর অনুষ্ঠান নিমিষেই পণ্ড করে দিলেন নোবেল।”
ফুলবাড়ি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী এই কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে দু’দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এ উপলক্ষে কলেজ প্রাঙ্গণ আলোকসজ্জ্বায় রঙিন করে তোলা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে ৫০ বছর পূর্তি ও সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. মশিউর রহমান, কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ, পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আলী, সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, পূর্তি অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ও ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম রিজু, সদস্য সচিব ও জসিমিয়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী সে সময় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের প্রথম দিন ছিল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা, ডকুমেন্টরি প্রদর্শন, র্যাফেল ড্র এবং ঢাকার শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের পর রাতে মঞ্চে ওঠেন গায়ক নোবেল।
২০১৯ সালে ভারতের জি-বাংলা টিভির রিয়েলিটি শো ‘সা রে গা মা পা’তে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতেও পরিচিতি পান নোবেল; প্রতিযোগিতায় তিনি তৃতীয় হয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে নানা মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন এই তরুণ শিল্পী।
Leave a Reply