তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে সরকারী নয়নজলী ভরাট ও গাছ কেটে হিমাগার নির্মান করার অভিযোগ উঠেছে। তানোর টু চৌবাড়িয়া রাস্তার মালার মোড়ের উত্তরে ঘটে রয়েছে ভরাট ও গাছ কাটার ঘটনা। নয়নজলি ভরাটের কারনে এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে বলে আশংকা স্থানীয়দের। এদিকে তিন ফসলী কৃষি জমির কোন শ্রেণী পরিবর্তন না করে হিমাগার করছেন শহরের প্রভাবশালী ঠিকাদার বজলুর রহমান, ও খড়িবাড়ি বাজারের বাইক শোরুমের মালিক শরিফ। শুধু নয়নজলি ভরাট না রাস্তার একাধিক ছোট বড় গাছও কেটেছেন তারা। পানি নিস্কাশনের কোন ব্যবস্থা না রাখায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভরাট কাজ বন্ধ না হলে বর্ষা মৌসুমে পার্শ্ববর্তী গ্রামে প্রচুর পানি জমা হয়ে থাকবে। সরেজমিনে দেখা যায়, তানোর টু চৌবাড়িয়া রাস্তার পশ্চিমে মালার মোড়ের উত্তরে তিন ফসলী প্রায় ২৫ বিঘা জমির উপর নির্মিত হচ্ছে আলুর হিমাগার। তিন ফসলী কৃষি জমির কোন শ্রেণী পরিবর্তন করেনি কর্তৃপক্ষ। রাস্তা সংলগ্ন অন্তত ৭০০-৮০০ হাত লম্বা নয়নজলি দখলে নিয়ে বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে এবং কাটা তার দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। ভরাটের জন্য সমান তালে রাস্তার গাছপালা কেটে উজাড় করে ফেলা হয়েছে। রাস্তার পূর্বদিকে বালিকা স্কুল ও হাফেজ খানা। দিন রাত সমান তালে ভাড়ী যন্ত্রের শব্দে লিখাপড়ার চরম ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে।
সেখানে দায়িত্বে আছেন শাহিন ও হাতিশাইল গ্রামের সাইফুল নামের একজন। শাহিন জানান এলজিইডি অফিস কে অবহিত করে ভরাট করা হয়েছে এবং পানি বের করার ব্যবস্থা করা হবে। অথচ পানি বের করার তীল পরিমান ব্যবস্থা না রেখে জবর দখল করা হয়েছে। সুত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী খাদ্য ঘাটতি চলছে। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়নি। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশ তিন ফসলী জমিতে কোনভাবেই শিল্পকল কারখানা নির্মান করা যাবে না এবং জমির শ্রেণীও পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু সেই নির্দেশনাকে অমান্য করে তিন ফসলী জমিতে চলছে হিমাগার নির্মান। প্রায় ২৫ বিঘা জমির উপরে হিমাগার নির্মিত হওয়ার কারনে আলু ও বোরো চাষ হয়নি। এভাবে কলকার খানা হতে থাকলে অদুর ভবিষ্যতে প্রচুর খাদ্য ঘাটতির আশংকা করছেন কৃষি বিভাগ। স্থানীয়রা জানান, উপজেলায় ইতিপূর্বে কৃষি জমিতে পাঁচটি হিমাগার নির্মান হয়েছে এবং আমান হিমাগার নির্মানের জন্য তানোর টু মুন্ডুমালা রাস্তায় জমি কিনে রেখোছেন। মালার মোড়ে যে সব জমিতে হিমাগার নির্মান হচ্ছে বর্ষা মৌসুমে কয়েক গ্রাম পানিতে ঢুবে যাবে এবং আশপাশের জমিতে চাষাবাদ হবে না। আবার রাস্তার গাছ কেটে সরকারী নয়নজলি ভরাট করছে দেদারসে। কারো কিছু বলার নেই। ভারি মেশিনের শব্দে ঘুমতো দুরে থাক পরিক্ষার্থীরা পড়ালিখা পর্যন্ত করতে পারছেন না।
হিমাগারের মালিক শহরের প্রভাবশালী ঠিকাদার বজলুর জানান, কৃষিপণ্য সংরক্ষনের প্রয়োজন। এজন্য জমির শ্রেণী পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয় না। সরকারী নয়নজলি দখল করা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, এসব ভূমি দপ্তর দেখবে বলে এড়িয়ে যান।কামারগাঁ ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদার কাউসার জানান, সরকারী নয়নজলি ভরাট করা বেআইনী, আর জমির শ্রেণী পরিবর্তন না করে হিমাগার নির্মান করা যায় না। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কে বিষয়টি অবহিত করব এবং সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন সোমবার সরেজমিনে ঘটনাস্থল তদন্ত করে এমন হয়ে থাকলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। নয়নজলি ও গাছ কাটার কোন এখতিয়ার নেই। ঘটনার সত্যতা পেলে কোন ছাড় দেওয়া হবে না
Leave a Reply