মোঃজিল্লুর রহমান চারঘাট,(রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ
দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার এ ঘোষণা আসার পর রাজশাহীর চারঘাটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কার করার তোড়জোড় চলছে। তবে চারঘাটের বেশির ভাগই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই পাঠদানের অনুপযোগী অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর শ্রেণিকক্ষের অবস্থা নাজেহাল। কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ঠিকাদারের সরঞ্জাম রাখার জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে,
আবার কিছু বিদ্যালয়ে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলো ক্লাস নেয়ার অনুপযোগী বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিস অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায় ৭২টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ১৫ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিল্ডিং নির্মাণ ও ওয়াশব্লকের কাজ চলছে। এছাড়াও আরো ২০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণসহ নানা রকম উন্নয়ন কাজ চলমান আছে।
রোববার সরেজমিন উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে করুণ চিত্র। কিছুকিছু বিদ্যালয়ে মাসের পর মাস শিক্ষকরা পা মাড়াননি।
রোববার সকালে উপজেলার মৌল ভাগ বাসুদেবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গিয়ে দেখা যায় সেখানে নতুন ভবন নির্মাণকাজ চলছে। পাশেই রয়েছে তিন রুম বিশিষ্ট ক্লাসরুম। মাঠ জুড়ে উঁচু করে রাখা হয়েছে মাটি। অফিস রুমের দরজার সামনে স্তুপ করে রাখা হয়েছে সিমেন্টের বস্তা। দুইটা মাত্র ক্লাসরুম রয়েছে, দুইটার ভেতরেই রাখা হয়েছে লোহার রড, পাইপ, তার ও টিনের ডাম। সবগুলো রুমের তালা খোলা। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বসার মত পরিবেশ নেই।
উপজেলার নাওদাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়েও নতুন ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। সেখানেও তিনরুম বিশিষ্ট ভবনের সামনে পাহাড়সম মাটির স্তুপ। বিদ্যালয়ের মাঠে পা ফেলানোর মত জায়গা নেই। রুমের সবগুলো তালা খুলে ভেতরে রাখা হয়েছে নির্মাণ কাজের সামগ্রী। শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে প্রবেশ করার মত জায়গা নেই।
এছাড়াও উপজেলার জয়পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, জাগিরপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিরোজপুর (১) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাবিবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে একই চিত্র দেখা গেছে। উন্নয়নকাজ বাস্তাবায়নকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান গুলো তাদের নির্মাণ সামগ্রী রেখে ক্লাসরুম গুলো অনুপযোগী অবস্থায় রয়েছে।
বিদ্যালয়ের গুলোর ক্লাসরুম সম্পর্কে জানতে চাইলে চারঘাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি নাজমুল হক বলেন, কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ই ঠিকাদারকে ক্লাসরুমে নির্মাণ সামগ্রী রাখার অনুমতি দেয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ঠিকাদাররা এ সুযোগটা নিয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা বিষয়টা শুনে আমি ঠিকাদারের নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নিতে নির্দেশনা দিয়েছি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমের ভেতরে নির্মাণ সামগ্রী রাখার কোনো নিয়ম নেই। তবুও ঠিকাদাররা নির্মাণ সামগ্রী রেখে বিদ্যালয় গুলো অনুপযোগী করে রেখেছে। তবে ১২ই সেপ্টেম্বরের আগেই সবগুলো বিদ্যালয় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে ক্লাস নেয়ার উপযোগী করা হবে।
Leave a Reply