সোহেল রানা বাবু,
বাগেরহাট প্রতিনিধি:
বাগেরহাটের শরণখোলায় এক সাথে তিন কন্যা শিশুর জন্ম দিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন দরিদ্র ময়না বেগম (৩৫)। স্বামী পরিত্যক্তা ময়না বেগমের দরিদ্র পরিবারে ৭ বছর বয়সী ছেলে ও ৪ বছর বয়সী মেয়ে থাকতেও আবার তিন কন্যার জন্ম হওয়ায় চিন্তার ভাজ পড়েছে তার স্বজনদের মধ্যেও। সদ্য জন্ম নেয়া তিন শিশু কন্যা সুস্থ থাকলেও ওজন কিছুটা কম বলে জানান হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
শনিবার(২৫ ফেব্রুয়ারী) বিকালে উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর ভোলারপাড় গ্রামের মৃত ছায়েদ তালুকদারের মেয়ে এবং মঠবাড়িয়ার জামাল হাওলাদারের স্ত্রী ময়না বেগম প্রসব বেদনা নিয়ে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। রবিবার সকাল ৯টায় হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে তিনি তিন কন্যা শিশুর জন্ম দেয়। বর্তমানে মা ও তিন কন্যা সুস্থ আছে। তবে শিশুদের ওজন কম থাকায় ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তাদেরকে বেবি হোমে পাঠানোর চিন্তা করছেন চিকিৎসকরা।
তিন শিশু কন্যার নানী পিয়ারা বেগম (৬৫) বলেন,আমি ভিক্ষা করে সংসার চালাই। মেয়ের গর্ভের বয়স যখন ৫ মাস তখন ওর জামাই চলে যায়। এরপর আর আসেনি। সেই থেকে আমি দুই নাতি ও অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে কোনো রকম খেয়েনা খেয়ে থেকেছি। কিন্তু এখন আবার এক সাথে তিন কন্যা (নাতি) হয়েছে। তাই খুব চিন্তায় আছি কিভাবে ওদের বড় করবো।
ময়না বেগমের বোন রাশিদা বেগম বলেন,আমরা ৫ বোন সবাই অসহায়। কেউ কাউকে সাহায্য করার মতো সামর্থ নাই। তাই এখন চিন্তা করছি সদ্য জন্ম নেয়া এই তিন শিশু কন্যাকে নিয়ে কি করবো। খবর শুনে অনেকেই ওদের নিতে চায়। তবে,এখনো চিন্তা করিনি কি করবো।
শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর স্বাস্থ্য সেবিকা (নার্স) রাবেয়া আক্তার বলেন,শনিবার ময়না বেগমকে নিয়ে হাসপাতালে আসে। এরপর আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখি তিনটা বাচ্চা রয়েছে পেটে। তাই রোববার সকাল ৯টার দিকে নরমাল ডেলিভারি করে তিনটি কন্যা শিশুকে প্রসব করাই। বর্তমানে মা ও তিন শিশু ভাল আছে।
শরণখোলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রিয় গোপাল বিশ্বাস বলেন,হাসপাতালে তিনটা বাচ্চা খুব ভাল ভাবে ডেলিভারি হয়েছে। কিন্তু ওদের ওজন কম তাই ইনফেকশনের ঝুঁকি রয়েছে। এজন্য বেবি ইনকিউবেটরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বাচ্চার মা সুস্থ রয়েছে।
শরনখোলা উপজেলা চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন শান্ত বলেন, আমি পিয়াসা বেগমের পরিবার সম্পর্কে আগে থেকেই জানি। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে পিয়াসা বেগমের ভিক্ষার টাকায়ই তাদের পরিবার চলে। শুনেছি পিয়াসা বেগমের জামাই তার মেয়ে ময়না বেগমের কোন খোঁজ খবর নেয় না। এটা খুবই দুঃখ জনক। আমি সন্তার জন্মের কথা শুনে আমি হাসপাতালে দেখে এসেছি।
Leave a Reply