মনিরুল ইসলাম,সাপাহার(নওগাঁ) প্রতিনিধি: আমের রাজধানী খ্যাত নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় বাগানে বাগানে আমচাষীরা এখন পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। নাওয়া খাওয়া ছেড়ে তারা আমবাগানে সার ও কীটনাশক প্রয়োগে ব্যস্ত সময় পার করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগের দিনে দেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা ছিল আমের রাজধানী হিসেবে খ্যাত। বর্তমানে পর পর কয়েক বছর ধরে সাপাহার উপজেলার আম বহি:বিশ্ব সহ দেশের রাজধানী এবং প্রায় প্রতিটি জেলায় সুনামের সাথে স্থান করে নেয়ায় দেশের প্রতিটি প্রান্তের মানুষ এক নামে এখন সাপাহার উপজেলাকে চিনে ও জানে। আমের সিজন আসলেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যাবসায়ীরা সাপাহারে এসে ভিড় জমায়। গতবছর আমের মৌসুমে শুধু সাপাহার উপজেলা সদরে অবস্থিত আড়াই শতাধিক আমের আড়ত হতে প্রায় ৩০কোটি টাকার আম বিক্রি হয়েছে।
উপজেলা সদরের একাধিক আমবাগান মালিকদের সাথে কথা হলে তারা জানান যে, সাপাহার উপজেলার সব জায়গার মাটি আম চাষের উপযোগী। এজন্য এখানকার কৃষককুল ধানের বদলে আমচাষে ঝুঁকে পড়েছেন। বর্তমানে এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করে সর্বচ্চ ১০হাজার টাকার ধান বিক্রি করতে পারা যায় পক্ষান্তরে ওই এক বিঘা জমিতে আম চাষ করে কম পক্ষে ১লক্ষ টাকার আম বিক্রি করা যায়। তফাৎটি আকাশ পাতাল ব্যাবধান হওয়ায় এখানকার কৃষককুল এখন আম চাষে বেতিব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন। উপজেলায় যে লোকের ১০শতাংশ জমি রয়েছে সেও তার ওই টুকু জমিতে কয়েকটি আম গাছ লাগিয়েছেন।
বর্তমানে সাপাহারে কোন অচেনা ব্যক্তি আসলে চারিদিকে চোখে পড়বে শুধু আমের বাগান আর বাগান। গতবছর উপজেলায় ৬হাজার ২০০শ’ হেক্টোর জমিতে আমের উৎপাদন হয়েছিল এবছর এর পরিধি আরোও ব্যাপকতা লাভ করে এখন ৮হাজার ২৫০হোক্টোর জমিতে উন্নত হয়েছে বলে উপজেলা কৃষিদপ্তর থেকে জানা গেছে। পর পর কয়েক বছর ধরে উপজেলায় আম চাষে এক বিপ্লব ঘটায় বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য মন্ত্রী বাবু সাধন চন্দ্র মজুমদার ইতো মধ্যেই এই উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য জায়গা নির্ধারণ সহ যাবতীয় ব্যাস্থা গ্রহণ করেছেন। উপজেলা সহ আশেপাশের আমচাষীরা অচিরেই এখানে একটি অত্যাধুনিক আম সংরক্ষনাগার ও জুস জেলি তৈরীর কারখানা স্থাপনের জন্য সরকার ও দেশের বিত্তবানদের নিকট আকুল আবেদন জানিয়েছেন।
Leave a Reply