মোঃমশিয়ার রহমান,নীলফামারী প্রতিনিধি
হিন্দু পুরান অনুযায়ী তিস্তা নদী দেবী পার্বতীর কাছ থেকে উৎপন্ন। তিস্তা নামটি এসেছে ত্রি – সেতারা বা তিন প্রবাহ থেকে । সিকিম হিমালয়ের ৭ হাজার ২ শত মিটার উচ্চতায় অবস্থিত চিতাম্বু হ্রদ থেকে তিস্তা নদীর সৃষ্টি। ভারত থেকে বয়ে আসা তিস্তা নদী নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খড়িবাড়ী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এক কালের খরস্রোতা তিস্তা নদী জলঢাকা উপজেলার চারটি ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ভিতর দিয়ে রাজার হাট উপজেলায় চলে ঘেছে। সেই তিস্তা নদী এখন পানি শুন্য হয়ে ধু ধু বালু চরে পরিনত হয়েছে।
তিস্তা নদীর উজানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ির গজল ডোবায় বাধ নির্মান করে পানি মহানন্দা নদী তে নিয়ে যাওয়ার কারনে বাংলাদেশ এ বছর পানি প্রবাহ হ্রাস পেয়ে তিস্তার ডালিয়া পয়েন্ট থেকে রাজারহাট পর্যন্ত প্রায় ৮৫ কিঃ মিঃ ড্রেজিং না করার ফলে নদীর বুক জুড়ে ভরাট হয়ে ধু ধু বালু চরে পরিনত হয়েছে। ভারত তিস্তা থেকে পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় তিস্তার সেচ বাধ প্রকল্প প্রায় অকার্যকর হয়ে পরেছে । নদীতে পানি না থাকায় ধু ধু বালু চরে পরিনত হয়ে বিভিন্ন ফসলের মাঠে পরিনত হয়েছে । জেগে উঠা চরে ধান, ভুট্টা,পেয়াজ,রসুন,বাদাম,মরিচ, কুমড়া, সহ নানান ধরনের সবজি ও রবি শষ্যের চাষ হচ্ছে।
তিস্তার পানির নায্য হিস্যা আদায়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত না হওয়ায় এবং স্বাধীনতার পরে থেকে আজ পর্যন্ত ড্রেজিং না করায় নদীর তল দেশ ভরাট হয়ে বর্তমানে খরস্রোতা তিস্তা নদী এখন মরা খালে পরিনত হয়েছে। নদীতে পানি না থাকায় চীলমারী ও বুড়িমারী বন্দরের সাথে নৌ যোগাযোগ, মালামাল পরিবহন বন্ধ রয়েছে প্রায় দের যুগ থেকে। নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ডালিয়া পয়েন্ট সুত্রে জানা যায় স্থানীয় ভাবে কৃষকরা তিস্তার ডান ও বাম তীর ইনলেক্ট কালচারের মাধ্যমে বিদ্যুত ও ডিজেল চালিত পাম্প দিয়ে সেচ কাজে পানি ব্যাবহার এবং শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার পানি সরবরাহ কমে আসায় তার হ্রাস পেয়েছে।
এতে করে চলতি মৌসুমে চাষ নিয়ে উৎবিগ্ন হয়ে পরেছে কৃষক রাখা। নদীর পানি হ্রাস ও আজানের পাহাড়ি ঢলে বালু পড়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় সুসাধু ও অন্যান্ন মাছ না হওয়ার নদীকে ঘিরে শত শত জেলে পরিবারের আয়ের উৎস বন্ না করায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে অসংখ্য বাক ও চরের সৃষ্টির ফলে বর্ষাকালে নদীর পানির ধারন ক্ষমতা কমে যায় এবং জলঢাকা এলাকার প্রায় ২৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গ্রাম গুলো নদী ভাঙ্গন ও বন্যা কবলিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে ।
নদী পাথরের বাসিন্দা আলম ও শাহিন জানায় স্বাধীনতার পর এতে কমে পানি আরও কখনো ছিল না। তিস্তার পানির নায্য হিস্যা চাই দাবী এলাকাবাসীর।
Leave a Reply