বরেন্দ্র নিউজ ডেস্ক :
চাকরি নয় অন্যদের চাকরি দেয়ার লক্ষ নিয়েই বড় হয়েছি। ব্যাবসা যখন শুরু করবো তখন বাড়ি ভাড়া নেওয়ার দরকার ছিল। হাজারিবাগ এলাকায় কোনো মেয়ে ব্যাবসায়ী ছিল না, তাই জায়গা ভাড়া করা নিয়ে করতে হত সংগ্রাম। অনেক কষ্টে মিলল জায়গা। স্বপ্ন বাস্তবেও রুপান্তর হতে লাগলো।
চামড়াজাত পণ্য তৈরিতে আমার তখন পুঁজি খুবই কম ছিল, তাছাড়া চারপাশের মানুষের কটুক্তি তো ছিল ই। তবে কোনো কিছুই বাধা হয়ে দাড়াইনি। বরং সে কথা গুলি অনুপ্রেরনা দিয়েছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। শুধু দেশে নই দেশের বাইরেও পণ্য সরবরাহ শুরু হল। আমার পণ্য যেতে শুরু করল কানাডা ও সুইডেন এ।
সততা আর মনবল নিয়ে যে কাজ শুরু করেছিলাম ২০০৫ সালে, তার ফল পেতে শুরু করেছি এখন। ছোট বেলা থেকেই সৃজনশীল কাজের প্রতি বেশ ঝোঁক ছিল। বিশেষ করে দেশিও পণ্যের প্রতি ছিল আলাদা ভালোবাসা। আর এই থেকেই শুরু হয়েছিল তার ব্যাবসা। তানিয়া পড়াশোনা করেছেন লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে। সেসময় থেকেই টুকটাক ব্যবসা শুরু করেন।
আর যেহেতু নিজের পড়াশোনার বিষয়ই লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং, তাই সেখান থেকে চামড়াজাত পণ্য নিয়ে ভাবনার কথা মাথায় আসে তার। পরিবারের কেউ ব্যবসা-বাণিজ্যে না থাকলেও নিজের মনোবল নিয়ে কাজ শুরু করেন। আস্তে আস্তে করে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন তিনি।
আজ তার সেই ব্যবসায়ের বার্ষিক লেনদেন এক কোটি টাকার ওপরে। কিন্তু ব্যবসার শুরুতে বেশ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে মিস ওয়াহাবকে। কারণ এক নারী চামড়ার পণ্য নিয়ে ব্যবসা করবে তা তখন লোকে সহজভাবে নিতো না। বাংলাদেশ ইনস্টিিটউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে অনার্স পড়ার সময় থেকে টুকটাক ব্যবসা শুরু।
এরপর পড়াশোনার সূত্র ধরেই চামড়াজাত পণ্যের ব্যবসা করার চিন্তা মাথায় আসে। যদিও নামীদামি কোম্পানির চাকরির সুযোগ ছিল, কিন্তু সেসব বাদ দিয়ে চামড়াজাত পণ্যের উৎপাদন আর সেগুলো বাজারে ছাড়ার কাজটা শুরু হলো শেষ বর্ষে পড়ার সময়। করপোরেট উপহার সরবরাহ থেকে শুরু।
সেটা শুধু চামড়ার পণ্যে সীমাবদ্ধ না হয়ে কৃত্রিম চামড়া, পাট, কাপড় ইত্যাদি দিয়ে তৈরি ডায়েরির মলাটা, কনফারেন্সের ব্যাগ, ওয়ালেটসহ নানা রকম উপহারপণ্য। শুরুটা ছিল এভাবে। তিনি বর্তমান একটি অনলাইন গিফটশপ ট্যান-এর স্বত্বাধিকারী। জানা গেল, ২০০৮ সালে সেরা এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার অর্জন করেন তানিয়া।
তারপর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার থেকে নির্বাচিত হয়ে ইতালির মিপেল মেলায় অংশ নেয় তার প্রতিষ্ঠান। ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেলোশিপ পান, যেখানে ১৯টি দেশের ১৯ জন নারী উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া পেনসাকোলা সিটির গভর্নরের কাছ থেকে অনারারি সিটিজেনশিপ সার্টিফিকেট লাভ করেন, যাকে ব্যবসায়ীক জীবনের অন্যতম অর্জন হিসেবে দেখেন তিনি।
Leave a Reply