শিরোনাম
রাণীনগরে আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার-বরেন্দ্র নিউজ রাজশাহীতে টহল গাড়ি থেকে ছিটকে পুলিশ কনস্টেবলের মৃত্যু-বরেন্দ্র নিউজ গোদাগাড়ীর গোগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুই প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ-বরেন্দ্র নিউজ বিয়ে করতে ছুটি নিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এনজিও কর্মীর মৃত্যু-বরেন্দ্র নিউজ মহাদেবপুরে অটোরিকশাতে চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎ পিষ্ট হয়ে চালকের মৃত্যু-বরেন্দ্র নিউজ কুড়িগ্রামে শেখ মুজিবুর রহমান আন্ত:কলেজফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতিব্রহ্মপুত্রের ৩টি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপর হাজারো মানুষ পানিবন্দি-বরেন্দ্র নিউজ মহাদেবপুরে মালাহার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারীদের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন–বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যা ৩ জনের যাবজ্জীবন-বরেন্দ্র নিউজ কুড়িগ্রামে বন্যায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী : ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদীর পানি বিপদসীমার উপর-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ-বরেন্দ্র নিউজ
খাদ্যে বিষক্রিয়া : কী, কেন এবং করণীয়

খাদ্যে বিষক্রিয়া : কী, কেন এবং করণীয়

আখতার হামিদ খান : কেস : ১- আল-মামুন, তরুণ ম্যাজিস্ট্রেট
গেল মাসে বিয়ে করেছে। ছোট্ট সংসার। সুমি ওর বউ, লক্ষী বউ। সুমিকে মায়ের কাছে যেতে হবে, মা অসুস্থ। যেতে ইচ্ছে করছে না, মামুন ছুটি পায়নি। উপায় নেই। সুমি নিজে রাঁধে, সুস্বাদু রান্না। বিয়ের পর থেকে মামুন বাইরে খায় না। বাইরের খাবার মুখেই রোচে না। সুমি নিজে নিজে বুদ্ধি আঁটে। কয়েক পদের মাছ, মাংস রান্না করে। কন্টেইনারে করে ডীপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখে। কাজের বুয়া ভাত রেঁধে দিবে। তরকারী গরম করে দিবে। ব্যাস। নিশ্চিন্ত মনে সে চলে যায় মায়ের কাছে।
পঞ্চম দিনের ঘটনা। অফিস বন্ধ। সকালে মাংস দিয়ে পরোটা খেয়েছে মামুন। মাংস রান্না করাই ছিল। গরম করে দিয়েছে বুয়া। দুপুর থেকে আর খেতে ইচ্ছে করে না। তবুও খেলো। একই মাংস খেয়েই শুয়ে আছে। একা। শুয়ে থেকেও স্বস্তি নেই। পেটের ভেতর যেন ওলোটপালোট কিছু ঘটছে।
বিকেলের দিকে অবস্থা খারাপ। কতক্ষণ পরপরই পেট মোচড় দিয়ে উঠছে, ব্যথা হচ্ছে। ব্যথার তীব্রতা আস্তে আস্তে বাড়ছে। ক’একবার টয়লেটে গেল ও। কিছুটা পাতলা পায়খানা, লালচে রঙ। শান্তি পেল না। শরীর ম্যাজ ম্যাজ করছে, মাথাটিও যেন গুলিয়ে যাচ্ছে। কী করবে সে এখন?
পাশের ফ্ল্যাটে আছেন সিনিয়র সহকর্মী। ওনার কাছেই গেল মামুন। অবস্থা দেখে হাসতে শুরু করলেন তিনি। ‘বউ গেছে মাত্র পাঁচদিন। পাঁচদিনের বিরহেই এই বেহাল অবস্থা!’ তিনি হাসিতে গড়িয়ে পড়ছেন। পাত্তা পেল না মামুন। ফিরে এলো রুমে। এর মাঝে প্রায় এক ঘণ্টা চলে গেছে। তীব্রতা বাড়ছেই। ব্যথা যেন বুকের দিকে সঞ্চারিত হচ্ছে। ভয় পেয়ে গেল সে। তবে কী হার্ট অ্যাটাক হয়েছে! ঘামতে থাকে এবার। দর দর করে বেরিয়ে আসছে ঘাম। সুমির কথা মনে পড়ছে, মায়ের কথা মনে পড়ছে। ছুটে এলো আবার পাশের ফ্লাটে। সহকর্মীটি এবার ভড়কে গেলেন। মামুনকে শুইয়ে দিলেন নিজ বেডে। বমি আসছে এবার। কয়েকবার বমি করল। পেট খালি হয়ে গেছে। আশ্চর্য! বমির পর বেশ শান্তি পাচ্ছে সে। বুকের চাপ কমে যাচ্ছে। ব্যথা কমে আসছে। হাসপাতালের করোনারী কেয়ার ইউনিটে নিয়ে আসা হয়েছে ওকে। ইসিজি করা হল, নানারকম পরীক্ষা চলল, না, অসুবিধে নেই। চিকিৎসকরা Clinically ডায়াগনোসিস করল, Food Poisoning. খাদ্যে বিষক্রিয়া। পরবর্তীসময়ে Stoolculture করা হলো, ফ্রিজ থেকে স্যাম্পল নিয়ে খাদ্য culture করা হলো। উভয় ক্ষেত্রে পাওয়া গেল জীবাণু সংক্রমণের প্রমাণ। জীবাণুটির নাম ক্যামপাইলো ব্যাকটর জেজুনি। জীবাণু ঘটিত বিষক্রিয়ার এটি অন্যতম একটি কারণ।
কেস : ২-সোহেল, সেলিম, জয় তিনবন্ধু
হোস্টেলে থাকে ওরা। হোস্টেলের অরুচিকর খাবার খেতে থেকে কাহিল। তিনজনেই এক সন্ধ্যায় গেল নামী ‘চটি হোটেলে’। সুলভ মূল্যে নানা জাতের খাবার পাওয়া যায়। সুস্বাদু। তবে পরিবেশ নোংরা, বয়গুলোও অপরিষ্কার। ওরা খেল। তৃপ্তি মিটিয়েই খেল নানারকম শুটকি ভর্তা।
রাত প্রায় দুটো। তৃপ্তির আসল ধাক্কা টের পেল। তিনজনেই ছুটছে টয়লেটে। পাতলা পায়খানা, বারবার। পেটে ব্যথা। ক্রমশ কাহিল হয়ে গেল তিনজনই। রাতেই হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো ওদের। চিকিৎসকরা রোগ নির্ণয় করলেন ‘খাদ্যে বিষক্রিয়া’। পরবর্তী সময়ে পায়খানা কালচার করে পাওয়া গেল সালমোনেলা মিউরিয়াম (salmonella murium) নামক ব্যাকটেরিয়া।
ব্যাখ্যা : দুটো পরিবেশ, একটি উন্নত, আরেকটি অনুন্নত, নোংরা পরিবেশ। উভয় ক্ষেত্রে ডায়াগনোসিস ‘ফুড পয়জনিং’। ফুড পয়জনিং কী? এটি আসলে এক ধরনের অন্ত্রের প্রদাহ (Gastro enteritis)। কারণ কী, কেন হয়? নানা কারণে হতে পারে :
জীবাণু ঘটিত কারণ : কয়েকটি জীবাণু, যেমন সালমোনেলা, ক্যামপাইলোব্যাক্টর, বেসিলাস চিরিয়াস খাদ্যে বিষক্রিয়ার জন্য সরাসরি দায়ী।
কিছু কিছু জীবাণু জৈবক্রিয়ায় সৃষ্ট বিষাক্ত পদার্থ (Toxin) এর মাধ্যমে বিষক্রিয়া ঘটে থাকে। যেমন স্টেফাইলোকক্কাস ওরিয়াস, ক্লসট্রিডিয়াম বুটুলিনাম।
সালমোনেলা দ্বারা আক্রান্ত হলে সাধারণত ১২-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রোগটি শুরু হতে পারে। অল্প অল্প জ্বর হওয়ার প্রমাণ আছে। শরীরে কাঁপুনি আসতে পারে। বমি বমি ভাব হতে পারে। বমিও হতে পারে। সর্বোপরি পাতলা পায়খানা হবে বহুবার। ২-৩ দিন চলতে পারে এমন অবস্থা। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেলে মৃত্যুর হার ১ শতাংশ মাত্র। 
টক্সিনের কারণে বিষক্রিয়া হলে ২-৬ ঘণ্টার মধ্যে উপসর্গ শুরু হয়ে যেতে পারে। শুরুতে বমি-পাতলা পায়খানা হতে পারে। পরবর্তীসময়ে বাড়তে থাকে পেটে ব্যথা।
স্টেফাইলোকক্কাসের বিষাক্ত পদার্থটির নাম Enterotoxin. যদিও এটি বিষক্রিয়ার একটি অন্যতম কারণ, মৃত্যুর হার একেবারেই অনুল্লেখ্য।
খাদ্যে বিষক্রিয়ার ভয়াবহ কারণ হলো ক. বুটুলিনামের বিষাক্ত পদার্থ (exotoxin)। এটি আগেই খাদ্যে তৈরি হয়ে থাকে। (Intradietic) টক্সিনটি ব্রেনের বিভিন্ন অংশে ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে। প্রধান উপসর্গগুলো হচ্ছে : ঢোক গিলতে অসুবিধে হবে, একটি বস্তুকে দুটি দেখা, চোখে ঝাপসা মনে হয়, পেশির দৌর্বল্যতা বেড়ে যাওয়া, এমন কী দুই হাত দুই পা প্যারালাইসিস পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। এভাবে রোগীর অবস্থা সংকাটাপন্ন হয়ে পড়ে। পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হয়ে রোগী শকে (shock) চলে যেতে পারে, মৃত্যুও হতে পারে।
সৌভাগ্য এই যে এই জীবাণু দ্বারা বিষক্রিয়ার হার খুবই নগণ্য। কিন্তু আক্রান্ত প্রতি তিন জনের মধ্যে দুই জনের মৃত্যু ঘটতে পারে। 
২. অজীবাণু ঘটিত কারণ : নানা রকম রাসায়নিক পদার্থ যেমন-আর্সেনিক, কিছু কিছু দুর্লভ উদ্ভিদ, সী ফুড, ধাতব পদার্থের কারণে খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি এবং বিষক্রিয়া নিয়ে হইচই হচ্ছে। সার, কীটনাশক প্রভৃতি রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা দূষণের কারণেও খাদ্যে বিষক্রিয়ার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। 
খাদ্যে বিষক্রিয়া এবং প্রতিরোধ : খাদ্যে বিষক্রিয়ার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে একসাথেই অনেকে আক্রান্ত হওয়া। সকলের একই খাদ্য গ্রহণের প্রমাণ থাকা এবং একই সময়ে একই রকম উপসর্গ সৃষ্টি হওয়া। 
বিষক্রিয়ার প্রতিরোধের প্রথম শর্তই হচ্ছে খাদ্য জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে, জীবাণুমুক্ত খাবার খেতে হবে। কীভাবে? নিজেকে পরিষ্কার থাকুন, কাজের বুয়াকে হাত পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে শিক্ষা দিন, নখ কেটে রাখতে বলুন, পরিচ্ছন্ন কাপড় পরিধান করতে উৎসাহী করুন, হাতে কাটা-ছেঁড়া ক্ষত থাকলে চিকিৎসা করান, প্রয়োজনে ওয়াটার প্রুফ ব্যান্ডেজ ব্যবহার করুন। যিনি রান্না করেন, অসুস্থ হলে রান্নাঘরে না যাওয়াই ভালো। টয়লেটের পর সাবান দিয়ে হাত না ধুয়ে কখনও খাদ্যদ্রব্য স্পর্শ করবেন না, খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই হাত ধুয়ে নিবেন। খাবারের উপর যেন হাঁচি-কাশি না ঝাড়েন, সতর্ক থাকতে হবে।
রান্নাঘর রাখতে হবে ঝকঝকে। স্যাঁতসেঁতে মেঝেয় সহজেই জীবাণু বিস্তার লাভ করে। মেঝে রাখতে হবে শুষ্ক, পরিচ্ছন্ন। রান্নার কাজে ব্যবহৃত যাবতীয় তৈজসপত্র, হাড়ি-পাতিল জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। পাতিল ধরার কাপড়ও ঘন ঘন বদলাবেন, নিয়মিত ধুয়ে শুকিয়ে রাখবেন। রান্নার সময় বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করুন। সন্দেহ থাকলে পানি ফুটিয়ে ব্যবহার করা উত্তম। রান্না করা এবং কাঁচা খাবার যেন কখনও মিশতে না পারে খেয়াল রাখবেন। খাবার ঢেকে রাখতে হবে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোনমতেই যেন মাছি, পোকা-মাকড়, ধূলিকণা তৈরি খাবারের স্পর্শ না পায়। নানাজাতের ধূলিকণা নানারকম জীবাণু বহন করে। মাছি ময়লা আবর্জনা থেকে উড়ে এসে খোলা খাবারে বসে। জীবাণু সংক্রমণের একটি বড় কারণ এই মাছি। ইঁদুর, বিড়াল থেকেও খাবার সংরক্ষণ করুন। বাসি খাবার খাবেন না। পচা মাছ এড়িয়ে চলা খুবই জরুরী। 
জীবাণুমুক্ত খাদ্যের জন্য হিমায়িত করণের ব্যবহার বিধি : প্রযুক্তির যুগে রেফ্রিজারেটর এখন কেবল বিলাসবহুল দ্রব্য নয়। অতি প্রয়োজনীয় সাংসারিক এবং বাণিজ্যিক অঙ্গ। রেফ্রিজারেটর থাকলেই চলবে না, এর ব্যবহারবিধিও জানতে হবে। দেখা গেছে, ৪/সে. গ্রে. এর নিচে অধিকাংশ জীবাণু বংশবিস্তার করতে পারে না। বিষাক্ত পদার্থও নিঃসৃত হয় না। ১০/সে.গ্রে. থেকে ৪৯ সে.গ্রে. পর্যন্ত তাপমাত্রা জীবাণুর বংশবিস্তারের জন্য মোক্ষম একটি তাপীয় অবস্থা।
রান্না করা খাবার একদম ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। পুরো কন্টেইনারটি ফ্রিজ থেকে বের করে আনবেন না, বরং আলাদা পাত্রে অল্প করে বের করে নিন। সঠিক মাত্রায় গরম করে পুরোটাই খেয়ে নিন। এতে যেন ভুল না হয়। 
অতিসম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, ক. বুটুলিনাম (টাইপ ই.বি) এবং ই-কোলাই নামক ব্যাকটেরিয়া ৩/সে.গ্রে. এর নিচেও বংশবিস্তার করতে পারে। যদিও হার খুবই কম তবুও সাবধানতার মার নেই। সুতরাং ফ্রিজের তাপমাত্রা সঠিক পর্যায়ে রাখবেন। 
রান্নার পূর্বে ফ্রিজের জমাট খাবার ভালো ভাবে গলিয়ে নিন। গলার জন্য সময় হাতে রাখুন। কমপক্ষে ৭০/সে.গ্রে. এর উপর রান্নার করুন, যেদিন রাঁধবেন, সেদিনই পুরো খাবার খেয়ে নিন। 
একসাথে অনেক দিনের জন্য রেঁধে ফ্রিজে রাখলে সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকে যায়। আজ একটু খেলেন, রেখে দিলেন বাকী অংশ, পরের দিন আবার পুরো খাবার বের করে খেলেন, রেখে দিলেন বাকী অংশ অস্বাস্থ্যকর। কারণ রান্না করা খাবার ঘরের তাপমাত্রায় (room temperature) ঠাণ্ডা হওয়ার সময় জীবাণুগুলো দ্রুত বংশবিস্তার করে, সময়ের সাথে সাথে ঝুঁকিও বাড়তে থাকে। তাই রান্না করা খাবার সহনীয় তাপমাত্রায় নেমে আসার সাথে সাথেই খেয়ে নেওয়া উচিত।
চিকিৎসা ব্যবস্থা : অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আতঙ্কগ্রস্ত হবার কোন কারণ নেই। কয়েকদিনের মধ্যেই উপসর্গ কমে যায়। রোগীকে বমি করানো গেলে উপকার পাওয়া যায়। রোগী নিজে গলায় হাত ঢুকিয়ে মুখ গহ্বরের পিছনের দেয়াল উদ্দীপ্ত করে বমি করতে পারেন। প্রচুর পানি পান করতে দিন। বেশি মাত্রায় পানি পান করতে পারলে অনেক সময় বমি হয়। বমির পর গরম চা পান করলে আরাম পাওয়া যেতে পারে।
শক্ত খাবার থেকে রোগীকে বিরত রাখুন। শুধুমাত্র তরল খাবার খেতে দিন। তাৎক্ষণিক উপসর্গ কমে গেলে নরম খাবার দেওয়া যেতে পারে। পাতলা পায়খানা এবং বমি বেশি হলে স্যালাইন, শরবত খাওয়াতে শুরু করুন। আশেপাশে যারা থাকবেন, এটি তাদের প্রধান একটি দায়িত্ব হওয়া উচিত। মনে রাখবেন, স্যালাইন, শরবত এক্ষেত্রেও রোগীর দেহের পানিশূন্যতা রোধ করে, ইলেক্ট্রোলাইটের অসামঞ্জস্যতা দূর করে। ফলে রোগী সহজেই কাহিল হয়ে পড়ে না।
জটিল অবস্থায় কিংবা শকে (shock) গেলে রক্তে (শিরায়) স্যালাইন দেওয়া হয়। তার আগেই যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। যদি রাসায়নিক এবং বিষাক্ত খাদ্যের ব্যাপারে সন্দেহ হয়, তবে স্টোমাক ওয়াশ দিতে হবে। যত দ্রুত পাকস্থলি টিউবের মাধ্যমে ধৌত করা যাবে, ততই মঙ্গল। এ অবস্থায় কাল বিলম্ব না করে রোগী নিয়ে হাসপাতালে ছোটা উচিত।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট (specific) চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। তবে উপসর্গের সাথে সংগতি রেখে কডিন ফসফেট এবং লোপেয়ামাইড ব্যবহার করা হয (শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ)। কিন্তু সালমোনেলা জীবাণু সন্দেহ করা হলে অথবা উপসর্গ দীর্ঘায়িত হলে সিপ্রোফ্লক্সাসিন খুবই কার্যকর। ক্যামপাইলো ব্যাকটর সন্দেহ হলে ইরিথ্রোমাইসিন বা উপরোক্ত ওষুধটি ব্যবহার করা হয়।
মহামারী আকারে খাদ্যে বিষক্রিয়া দেখা দিলে নিকটস্থ থানা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সিভিল সার্জন অফিস কিংবা পৌরসভায় খবর দিন। প্রথম ও প্রধান কাজ হলো খাদ্যে বিষক্রিয়ার উৎস শনাক্ত করা, রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া এবং চিকিৎসা করা। স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণের ভূমিকাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। নিজের খাদ্য নিরাপদ রাখুন, অন্যের সেবায় এগিয়ে আসুন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




<figure class=”wp-block-image size-large”><img src=”http://borendronews.com/wp-content/uploads/2020/07/83801531_943884642673476_894154174608965632_n-1-1024×512.jpg” alt=”” class=”wp-image-17497″/></figure>

© All rights reserved © 2019 borendronews.com
Design BY LATEST IT