মোঃ এমরান আলী রানা সিংড়া(নাটোর) প্রতিনিধিঃ
নাটোরের সিংড়ার কৃষি প্রধান চলনবিল অঞ্চলে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আর নদী পথে উজানের পানি এসে আকষ্মিক বন্যার কবলে ভুট্রা নিয়ে মহা বিপাকে পড়েছে কৃষক। নৌকা নিয়ে পানির নীচ থেকে ভুট্রা কেটে ঘরে তুলতে নানা দুভোর্গের শিকার হচ্ছেন তাঁরা। দ্বিগুন শ্রমিক খরচ দিয়েও অর্ধেকের বেশি জমি থেকে ভুট্রা আনতে পারছেননা। ফলে প্রতি বিঘা জমিতে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।
সরেজমিনে নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলনবিল অধ্যুষিত ডাহিয়া,সাতপুকুরিয়া,বেড়াবাড়ি ও হিজলী গ্রামের ভুট্রা চাষীদের বাড়ির পাশের খলায় গিয়ে দেখা যায় শ্রমিকরা ভুট্রা মাড়াই ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নৌকা নিয়ে জমি থেকে ভুট্রা কাটছেন।আবার কেউ ভুট্রার মোচা জালানী হিসাবে সংগ্রহ করছেন। কৃষকরা জানান হঠাৎ বন্যার পানি আসায় তাঁদের জমির ভুট্রা ডুবে গেছে। তারা জানান, গতবছর প্রতিবিঘা যেসব জমি থেকে ভুট্রা পেয়েছিল ৩৫ থেকে ৪০ মণ এবার এই দুযোর্গে সেই জমি থেকে ভুট্রা পাচ্ছেন ১৫ থেকে ২০ মণ।
ডাহিয়া গ্রামের কৃষক আরিফুল ইসলাম বলেন,আমি ৯ বিঘা জমিতে ভুট্রা চাষ করেছি। পানিতে সব জমি ডুবে গেছে। নৌকা আর শ্রমিক নিয়ে অর্ধেক জমির ভুট্রা কেটে খলায় তুলেছি। এখন খলাতেও পানি আসায় ভুট্রা মাড়াই নিয়ে বিপদে আছি। ডাহিয়া গ্রামের আরেক কৃষক রুহুল আমিন বলেন,আমার ২৩ বিঘা জমির ভুট্রা কাটা মাড়াই করে ঘরে তুলেছি। গতবারের চেয়ে অর্ধেক ফলন পেয়েছি। আমার প্রতি বিঘায় খরচ বাদে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। এই অবস্থায় দেনা পাওনা শোধ করতে পারবোনা।
সাতপুকুরিয়া গ্রামের মঞ্জুরুল ও হিজলী গ্রামের কৃষক জাহিদুল বলেন,সিংড়ার চলনবিলের নীচু এলাকার বেড়াবাড়ি ক্যানেলে বাঁধ নিমার্নের কারনে একটু বুষ্টি আর ঢল হলেই পানি জমে বিলের এই অংশে আকষ্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়। ফলে প্রতিবছরই কোন না কোন ফসল হানির ঘটনা ঘটে। তাঁরা এই ক্যানেল খনন সহ বাঁধ উচ্ছেদের দাবি জানান।
সিংড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন,চলতি বোরো মৌসুমে সিংড়া উপজেলায় ১৭ শত হেক্টর জমিতে ভুট্রা চাষ হয়েছে এর মধ্যে চলনবিলের ডাহিয়া ও ইটালী ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হেক্টর জমির ভুট্রা আগাম বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। নৌকা দিয়ে কৃষকরা এসব জমির ভুট্রা কাটছেন। তাতে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ভুট্রা কৃষকরা ঘরে তুলতে পারবেন। বাকি অঞ্চলে ভুট্রার ফলন ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে ৯০ ভাগ ভুট্রা কাটা মাড়াইয়ের কাজও শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply