শিরোনাম
রাণীনগরে আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার-বরেন্দ্র নিউজ মহাদেবপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে বীরেশ্বরপুর সালেমিয়া ক্বওমী মাদ্রাসার দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনী সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে ঘুষ লেনদেন করতে কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছে তহশিলদার-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত-বরেন্দ্র নিউজ নাচোলের সাংবাদিক মোহাম্মদ আলীর জানাজায় মানুষের ঢল-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মতবিনিময় সভা-বরেন্দ্র নিউজ বৈষম্য বিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলন ঢাকায় নিহত কাঠমিস্ত্রী তারেকের গ্রামের বাড়িতে কেন্দ্রীয় জামায়াতের নেতৃবৃন্দ-বরেন্দ্র নিউজ শিবগঞ্জে ওসি সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের মতবিনিময়-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে গোলাম রাব্বানীর বিচার চাই বৈসম্য বিরোধী শিক্ষক সমাজ-বরেন্দ্র নিউজ ভোলাহাটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির রক্ষায় জামায়াতের উদ্যোগ-বরেন্দ্র নিউজ
ঈদে শাড়ি দিয়েছিল ছেলে, বৃদ্ধাশ্রমে কাঁদছেন মা

ঈদে শাড়ি দিয়েছিল ছেলে, বৃদ্ধাশ্রমে কাঁদছেন মা

বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দা মোছাম্মৎ আসমা বেগম। বয়স হবে আনুমানিক ৬২ বছর। গ্রামের বাড়ি বিক্রমপুর জেলায়। ১৮ বছর আগে স্বামী হারিয়েছেন তিনি। এরপর দুই ছেলেকে অনেক কষ্টে লালন পালন করেছিলেন। বর্তমানে তার দুই ছেলেই স্থানীয় ঠিকাদার। নিজেদের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দুই ছেলে আরাম-আয়েশে আলাদা জীবন যাপন করছেন। কিন্তু অসুস্থ বৃদ্ধা মায়ের ঠাঁই হয়নি কোনো ছেলের ঘরেই। ছেলে আর তাদের বউদের ওপর অভিমান করে ১৬ মাস আগে ঘর ছেড়েছেন মা আসমা বেগম।

খায়ে না খায়ে পথে-ঘাঁটে ঘুরে এখন তার ঠিকানা হয়েছে রাজধানী ঢাকার কল্যাণপুর এলাকার চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার নামে একটি বৃদ্ধাশ্রমে।

বৃদ্ধা আসমা বেগম ও বৃদ্ধাশ্রমের তত্ত্বাবধায়কের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

আসাম বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের গ্রামের বাড়ি বিক্রমপুরে। আমার স্বামী এলাকায় ভালো ব্যবসা করতো। আমাদের দুই ছেলে। আমার স্বামী মারা গেছেন ২০০১ সালে স্ট্রোক করে। তখনও আমার ছেলেরা খুব একটা বড় হয় নাই। স্বামী মরার পরে অনেক কষ্টে তাদের বড় করছি বাবা। কিন্তু ছেলেরা বিয়ে কইরা সব পর হইয়া গেল। ছেলের বউ আমারে দেখতে পারে না, কথায় কথায় গালি গালাজ করে। ছেলেরাও কোনো কিছু বলে না। তারাও একই ব্যবহার করে। আমারে বাড়িতে থাকতে দিবে না। বয়স্ক মানুষ কি করমু, কই যামু। সব সহ্য কইরা এত বছর তাদের সাথেই ছিলাম। কিন্তু আর পারি নাই…’। আসমা বেগম এটা বলেই অঝোর ধারায় কান্নায় ভেঙে পড়েন।

ছেলেদের পেশা কি এবং তাদের আয়-উপার্জন কেমন এ বিষয়ে আসাম বেগম বলেন, ‘বাবা রে, বড় ছেলে বিক্রমপুরে ঠিকাদারি করে। ম্যালা টাকা কামায়। আর ছোট ছেলেটাও ঠিকাদার। কিন্তু সে বউ নিয়া শ্বশুর বাড়িতে থাকে। আমার দুই ছেলের ঘরে এখন ৫ জন নাতি–নাতনী। সবার কথাই মনে পড়ে।’

বৃদ্ধাশ্রমে আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাড়ি থেকে বের হইয়া গাজীপুর একটা বাড়িতে দুইটা ছোট বাচ্চারে প্রাইভেট পড়াতাম। কারণ আমি বিয়ের পরে এইচএসসি পাশ করেছিলাম। একটু শিক্ষিত আছি তো। কয় মাস পড়াইয়া, তাই দিয়া একা একা খাইতাম, থাকতাম। কিন্তু বেশি দিন পারি নাই। পরে আমার বোনের বাসায় গিয়ে উঠেছিলাম। আমার সেই বোনের ছেলেরাই আমারে এখানে দিয়া গেছে। এখন এখানেই থাকি। ছেলেরা তো কেউই কোনো খোঁজ খবর নেয় না।’

ঈদের সময় ছেলেরা নতুন কাপড় কিনে দিত কি না? ভাল খাবার দিত কি না? জানতে চাইলে আসমা বেগম বলেন, ‘তিন বছর আগে আমার বড় ছেলে আমারে একটা গোলাপি রঙের শাড়ি কিনে দিছিলো। এরপর গত দুই ঈদে কিছুই দেয় নাই। আর এই ঈদে তো তারা, আমার খবরই নেয় নাই।’

এবার রোজার ঈদে নতুন শাড়ি চান কি না জানতে চাইলে আসাম বলেন, ‘আমার ছেলের দেয়া গোলাপি রঙের শাড়িটাই অনেক ভালা। আমার আর শাড়ি লাগবো না, বাপজান’। এটা ফের হাউমাউ করে কান্না শুরু করেন বৃদ্ধা আসমা বেগম।

বৃদ্ধাশ্রমের মালিক মিল্টন সমাদ্দার। অসহায় ও আশ্রয়হীন বৃদ্ধদের খুঁজে খুঁজে নিজের গড়ে তোলা ‘চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ারে’ আশ্রয় দেন তিনি। মূলত নিজের ব্যক্তিগত আয়ের উপরই ৩২ বছর বয়সী এই যুবক চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটি। নিজের ব্যবসা থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে সকল বৃদ্ধাদের ভরণপোষণ করান তিনি। আর তার এ কাজে সহযোগিতা করছেন তার স্ত্রী মিঠু হালদার। শুধু বৃদ্ধ নয় মানসিক ভারসাম্যহীন ও প্রতিবন্ধীদেরও আশ্রয় দেন তারা। এমনকি মৃত্যৃর পর তাদের দাফন-কাফনের দায়িত্বও পালন করেছেন এই দম্পতি।

বৃদ্ধ ও মানসিক ভারসাম্যহীনদের জন্য রাজধানী কল্যাণপুর এলাকায় একটি ছয় তলা বাড়ির নিচতলার দুই ইউনিট ও আরেকটি দোতলা বাড়ির নিচ তলার পুরোটা নিয়ে তৈরি করছেন চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার নামক ওই বৃদ্ধাশ্রমটি। তার প্রতিষ্ঠানে ১৫ কর্মী রয়েছেন। যারা এসব বয়স্ক বাবা-মায়ের দেখাশোনা করেন। বর্তমানে মোট ২৩ জন বাবা ও ৩২ জন মা মিলে মোট ৫৫ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা রয়েছেন চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ার নামের এই বৃদ্ধাশ্রমে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




<figure class=”wp-block-image size-large”><img src=”http://borendronews.com/wp-content/uploads/2020/07/83801531_943884642673476_894154174608965632_n-1-1024×512.jpg” alt=”” class=”wp-image-17497″/></figure>

© All rights reserved © 2019 borendronews.com
Design BY LATEST IT