সোহেল রানা বাবু
বাগেরহাট প্রতিনিধি:
বাগেরহাটের রামপালে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চুরির অপবাদে শেখ আব্দুল্লাহ (২৫) নামের এক যুবককে প্রায় ২২ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। বাইনতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে ভুক্তভোগী যুবকের চোখ উপড়ে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। পরে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ব্রী-চাকশ্রী এলাকায়।
নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হওয়া ২ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আম গাছের সঙ্গে বেধে এক যুবককে বেধে মারধর করছেন কয়েকজন ব্যক্তি। পরে মাটিতে ফেলে পাড়াতে দেখা যায় ওই ভিডিওতে। এক পর্যায়ে তার দুই পায়ের তালুতে লাঠি দিয়ে পেটাতে দেখা যায় আবু সালেহ নামের এক ব্যক্তিকে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট যাওয়ার পথে রামপাল উপজেলার চাকশ্রি নামক এলাকা থেকে জোর করে শেখ আব্দুল্লাহ নামের ওই যুবককে তুলে নিয়ে যান ব্রি-চাকশ্রী এলাকার শেখ হাসান আলী ও ইউপি চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল্লাহর ভাগ্নে আবু সালেহসহ বেশ কয়েকজন। চুরির অপবাদে প্রায় ২২ ঘন্টা নির্যাতনের পরে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয় আব্দুল্লাহকে।
নির্যাতনের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পরে এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নির্যাতনের শিকার আব্দুল্লাহ সদর উপজেলার মুনিগঞ্জ এলাকার শেখ গফুরের ছেলে। তিনি বর্তমানে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নির্যাতনের শিকার আব্দুল্লাহ বলেন, ‘পূর্ব পরিচয়ের জেরে ব্রি-চাকশ্রী এলাকার শেখ হাসান আলীকে আমি ১ লাখ ২৭ হাজার টাকা ধার দেই। কিন্তু তিনি টাকা পরিশোধ নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। পরে টাকা বাবদ হাসান ইজিবাইকটি আমার কাছে বিক্রি করেন। দিন প্রতি দুইশ টাকা ভাড়া নিয়ে তিনি ইজিবাইকটি চালাতে থাকেন। কিন্তু কয়েকদিন পরে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেন হাসান। বাধ্য হয়ে গত জানুয়ারি মাসে ইজিবাইক নিয়ে আমি বিক্রি করে দেই। হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসান ও চেয়ারম্যানের ভাগ্নে আবু সালেহসহ কয়েকজন আমাকে জোর করে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেন।’
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল্লাহ বলেন, তার সামনে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। আবু সালেহ তার ভাগ্নে নন।
বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার বলেন, আব্দুল্লাহ’র শরীরে জখমের চিহ্ন রয়েছে।
পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, ‘ভিডিও দেখেছি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
Leave a Reply