: কাজী ও বর শ্রীঘরে মনিরুল ইসলাম, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহারে বিয়ে রেজিষ্ট্রির কাগজ পত্র ও ভূয়া সীল তৈরি করে বাল্যবিবাহ দেওয়ার অপরাধে সাপাহার সদর ইউনিয়নের নিযুক্ত কাজী মোবারক আলী ও বরকে আটক করা হয়েছে। এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৬ জানুয়ারী সকাল ৮টার দিকে পোরশা উপজেলার নিতপুর শহীদ পিংকু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী মঞ্জিলা (১৩) বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হয়। পরবর্তী সময়ে স্কুল ছুটি হয়ে গেলেও ওই ছাত্রী বাসায় না ফিরায় বাড়ীর লোকজন বিভিন্ন স্থানে তাকে খুঁজতে আরম্ভ করে। এসময় লোকজন মারফত জানতে পারে কুলাডাঙ্গা গ্রামের আফসার আলীর পুত্র আসাদুল (২২) তার কিছু বন্ধু-বান্ধবসহ মঞ্জিলার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে জোরপূর্বক চার্জার ভ্যানে তুলে পোরশা উপজেলার সরাইগাছীর দিকে নিয়ে গেছে। বিষয়টি ছেলের পরিবারকে জানালে তার পরিবার বলে ‘আপনার নাতনী আছে পরে বের করে দেওয়া হবে’ বলে নানান ধরণের তালবাহানা শুরু করে। তাদের এমন আচরণ দেখে আসাদুলকে ১ নম্বর আসামী, তছলিমের স্ত্রী নাজমা ওরফে নাজুকে ২নম্বর, জালাল উদ্দীনের ছেলে আলমগীর হোসেনকে ৩নম্বর,জিয়ার উদ্দীনের পুত্র আমানউল্লাহকে ৪ নম্বর,আফসার আলীর স্ত্রী পারভীনকে ৫ নম্বর আসামী করে পোরশা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করলে সেই মামলা সাপাহার পোরশা সহকারী পুলিশ সুপার এর কার্যালয়ে অবগতি করা হয়। আসামীকে ধরতে পোরশা থানার এসআই শাহীন চৌধুরী মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম থানা পুলিশের সহায়তায় ভিকটিমসহ আসামীকে গ্রেফতার করে পোরশা থানায় এনে আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে আসামী পুলিশের কাছে স্বীকার করে আমি মেয়েটিকে রেজিষ্ট্রী করে বিয়ে করেছি এক পর্যায়ে মেয়েটির বয়স কম হওয়ায় পুলিশ আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কোথায় রেজিষ্ট্রী করে বিয়ে করেছেন তখন সে জানায় সাপাহার কাজী অফিসের কাজী মোবারক আলী। দীর্ঘ দিন ধরে এভাবে রেজিষ্ট্রী ও ভূয়া সীল বানিয়ে বাল্যদিয়ে দেওয়ার অপরাধে গত২৯ জানুয়ারী বুধবার সন্ধ্যায় সাপাহার কাজী অফিসের কাজী মোবারক আলীকে সাপাহার সার্কেল অফিসে আনা হয় এবং আসাদুল ও মঞ্জিলার বিয়ের বিষয়টি জানানো হয়, প্রথমে কাজী বিষয়টি অস্বীকার করে টালবাহানা শুরু করে। কিছুক্ষন পরে আসামী আসাদুলকে কাজীর মুখোমুখি করলে কাজী মোবারক আলী- “হাসান আলী মিড়পুর ঢাকা” নামে ভূয়া সীল তৈরী করে বিয়ে রেজিষ্ট্রী করেছে স্বীকার করলে তাকে আটক করে। ঐ রাতেই সহকারী পুলিশ সুপার বিনয় কুমার পোরশা থানা পুলিশের হাতে আসামীকে তুলে দেন। শনিবার সকালে পোরশা থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) শাহিনুর ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান-ভূয়া সীল তৈরী করে বাল্যবিয়ে দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা হলে বৃহস্পতিবারে বর আসাদুল ও কাজীকে নওগাঁ জেল হাজতে প্রেরণ করা হয় । আটক কাজী মোবারক আলী সাপাহার উপজেলার কোচকুড়লীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ইসলাম ধর্মের শিক্ষক এবং সাপাহার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলে জানা গেছে।
Leave a Reply