বরেন্দ্র নিউজ ডেস্ক :
২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ৫৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৪৭ জন নিহত হয়েছেন। একইসঙ্গে এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১১৪১ জন।
এদিকে একই মাসে রেলপথে ৪৩টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৭টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ও আহত হয়েছেন ৫৮ জন, নিখোঁজ রয়েছেন ৩০ জন।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনসমূহ বিশ্লেষণ করে এ তথ্য প্রকাশ করেছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জানুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত পথচারী ১৬১ জন, চালক ১৯১ জন, পরিবহন শ্রমিক ৯১ জন, শিক্ষার্থী ১৪৬ জন, শিক্ষক ১০ জন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ১২ জন, নারী ১৩৯ জন, শিশু ৫৫ জন, সাংবাদিক ২ জন, চিকিৎসক ৫ জন, প্রকৌশলী ১ জন, মুক্তিযোদ্ধা ১ জন এবং ১২ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
এরমধ্যে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৪০ জন চালক, ১৩৭ জন পথচারী, ৮২ জন নারী, ৬৮ জন ছাত্র-ছাত্রী, ৪৩ জন পরিবহন শ্রমিক, ৩৭ জন শিশু, ৯ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ৭ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৪ জন চিকিৎসক, ১ জন মুক্তিযোদ্ধা, ৭ জন শিক্ষক ও ১ জন প্রকৌশলী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৭.৭৯ শতাংশ বাস, ২৫.৩৬ শতাংশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান, ৫.৯৭ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ৯.১৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২০.৩১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ৯.১৬ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ১২.২১ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর-লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
দুর্ঘটনায় ৫৯.১৩ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও ১৮.০৭ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৭.৭০ শতাংশ খাদে পড়ে, ৩.৩৮ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০.৭৫ শতাংশ চাকায় ওড়না পেছিয়ে এবং ০.৯৪ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের তুলনায় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনার হার ৩.৯১ শতাংশ, ২.০৫ শতাংশ নিহতের হার বৃদ্ধি পেলেও আহত হওয়ার ঘটনা ৭.০১ শতাংশ কমেছে।
পরিসংখ্যানের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের তুলনায় বিগত জানুয়ারি মাসে পথচারীকে গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা ৩.৯৭ শতাংশ, বেপরোয়া গতির কারণে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ১৭.০৭ শতাংশ, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনা ৮.০৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এই বছর মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৪১.৬১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৯ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২১.২৮ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত দুর্ঘটনার ৪.৭০ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ২.৪৪ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৯৪ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের তুলনায় বিগত জানুয়ারি মাসে সড়ক-মহাসড়ক উন্নয়নের ফলে যানবাহনের গতি বাড়ার কারণে জাতীয় মহাসড়কে ১.৬০ শতাংশ, ফিডার রোডে ১.৯১ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেলেও আঞ্চলিক মহাসড়কে ১.৪৪ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বিপদজনক ওভারটেকিং, রাস্তা-ঘাটের ক্রটি, ফিটনেস বিহীন যানবাহন, যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা, চালকের অদক্ষতা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোনের ব্যবহার, মাদক সেবন অবস্থায় যানবাহন চালানো, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে ফিডার রোড থেকে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা, রাস্তায় ফুটপাত না থাকা, ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ এবং ছোট যানবাহন বৃদ্ধিসহ মোট ১২টি দুর্ঘটনার কারণ উল্লেখ করা হয়।
এছাড়াও সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ কঠোরভাবে প্রয়োগ করাসহ ১২টি সুপারিশমালা প্রদান করে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
কপিরাইট © বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
Leave a Reply