নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : প্রবাসী স্বামীর ৪৫ লাখ টাকা, ৩০০ গ্রাম স্বর্ণ ও অন্যান্য দামী আসবাবপত্র আত্মসাতের অভিযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হীরা খাতুনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার চার্জ গঠন শেষে স্বাক্ষ্য গ্রহণের জন্য পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার স্বাক্ষ্য গ্রহণের আদেশ দেন বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুজ্জামান সরকার।
আসামী হীরা খাতুন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ও শিবগঞ্জ পৌর এলাকার সেলিমাবাদের আব্দুর রহিমের মেয়ে।
মামলা সুত্রে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কালুপুর গ্রামের আসাদুর রহমান মাস্টারের ছেলে কামরুজ্জামান অনেক বছর ধরে সিঙ্গাপুরের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। বিদেশ যাবার আগে ২০০৬ সালে কামরুজ্জামান বিয়ে করেন, শিবগঞ্জ পৌর এলাকার সেলিমাবাদ এলাকার আব্দুর রহিমের মেয়ে হিরা খাতুনকে। প্রবাসী কামরুজ্জামান দীর্ঘ ১৩ বছরে উপার্জনের সকল টাকা স্ত্রী হিরা খাতুনকে প্রদান করেছেন। কিন্তু প্রতারক হীরা খাতুন কামরুজ্জামানের টাকা, স্বর্ণ ও অন্যান্য দামী আসবাবপত্র হস্তগত করে ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে প্রবাসী স্বামীকে একতরফা তালাক পাঠায়।
এইমর্মে প্রবাসী স্বামী তার কষ্টার্জিত টাকা উদ্ধারের জন্য এলাকায় মীমাংসার উদ্যোগ নেয়। কামরুজ্জামানের বক্তব্য, স্থানীয় সালিসে টাকা ও স্বর্ণ ফেরত দিতে চায় হীরা খাতুন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই টাকা ও স্বর্ণালংকার ফেরত চাইলে হীরা খাতুন ও তার লোকজন তাদের হত্যার হুমকি প্রদান করে। বাধ্য হয়ে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে প্রবাসী কামরুজ্জামানের মা জায়েদা বেগম বাদী হয়ে হীরা খাতুনসহ ৫জনকে আসামী করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আমলী আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)কে তদন্তের নির্দেশ দেন।
সেই সময় এই চাঞ্চল্যকর মামলাটিকে ঘিরে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকা এবং বিভিন্ন জনপ্রিয় অনলাইন দেশ সংবাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি সাধারণ জনগনের মাঝে কৌতুহল ও আলোড়নের সৃষ্টি করে।
প্রতারণা করেছে মর্মে শিক্ষিকা হীরা খাতুনকে একমাত্র আসামী করে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) আদালতে চার্জশিট জমা দেয়।
দীর্ঘ ১ বছর পর বিচার বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নুরুজ্জামান সরকার মামলাটির স্বাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১৯ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।
এইমর্মে বাদীর কৌশুলী এ্যাডভোকেট ড. তসিকুল ইসলাম জানান, মামলার ঘটনা সত্য বিবেচনা করে বিজ্ঞ বিচারক মামলাটির স্বাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন। পরবর্তীতে এই মামলার সাক্ষী ও বিভিন্ন উপাত্ত প্রমানাদি বিচার বিশ্লেষন করে বিজ্ঞ বিচারক রায় দিবেন । আশাকরি আমার বাদী ন্যায় বিচার পাবেন।
হীরা খাতুনের কৌশুলী এ্যাডভোকেট মোঃ ইসমাইল জানান, মামলাটি স্বাক্ষী পর্যায়ে আছে। স্বামীর টাকা আত্মসাতের মামলা, মামলাটি সঠিক হয়নি। আইনি ধারায় হীরা খাতুন খালাস পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।-কপোত নবী।
Leave a Reply