সাইফুর রহমান শামীম ,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের রৌমারী’র চরাঞ্চলসহ জেলার ৯ উপজেলায় এবছর ভুট্টাচাষে বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।বিশেষ করে রৌমারী ও রাজিবপুরে সবচেয়ে বেশি ভুট্টাচাষ ব্যাপকভাবে সারা জাগিয়েছে কৃষকদের।তবে জেলা কৃষি বিভাগ জানায়,এবার জেলার সবকটি উপজেলাতেই গত বছরের তুলনায় ভুট্টাচাষ বেশি করা হয়েছে।সেই সাথে ফলনও হয়েছে বাম্পার।আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় কাঙ্খিত ফল প্রত্যাশা করা হচ্ছে।কৃষকরা জানান, ধান ও অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষ বেশী লাভ হওয়ায় কম খরচে অধিক মুনাফার আশায় বিকল্প ফসল হিসেবে এ চাষের দিকে তাদের ঝোঁক বেশি।তারা এ ভুট্টা চাষ করে বেশি লাভের স্বপ্ন দেখছেন।কৃষি বিভাগ বলছে, ভূট্টা একটি অত্যন্ত লাভজনক ফসল। মানুষের খাদ্যের পাশাপাশি মাছ, হাঁস-মুরগী ও গো-খাদ্য হিসেবে ভুট্টার ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় এর চাহিদাও বেড়েছে অনেক বেশি। ভুট্টা গাছের পাতা সুষম গো-খাদ্য এবং কান্ড জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ফলে একদিকে যেমন কৃষক তার গবাদি পশু পালন ও জ্বালানি চাহিদা মেটাতে পারে অপরদিকে বাজারে ভুট্রার ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষক এ ফসলে আগ্রহী হয়ে উঠছে। রৌমারী ও রাজিবপুরের চর-দ্বীপচরাঞ্চলে একসময় কৃষি ফসল হিসেবে গম, চিনা, মসুর, মাশকলাই,খেসারী, মুগডাল, বাদাম ও সরিষাসহ নানা ফসলের চাষাবাদ হত। কিন্ত এখন অল্প সময়ে এবং স্বল্প খরচে ভুট্টা চাষ হওয়ায় সেদিকেই এ দুই উপজেলায় কৃষকরা ঝুঁকছেন বেশি। অন্য ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় কৃষকের মাঝে অনেকটা অনিহা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও উন্নত জাতের উচ্চ ফলনশীল হাইব্রীড জাতের ভুট্টা চাষে মনোনিবেশ করেছেন এখানকার কৃষকরা। উপজেলার ফলুয়ারচর গ্রামের রাকিব মিয়া,সোহেল রানা বলেন, ভুট্টা চাষে অল্প পরিশ্রম, স্বল্প খরচে বেশী ফলন পাওয়া যায়, আমাদের এলাকায় এক শত জমিতে ২মন ভুট্টা হয়। চাষাবাদের খরচের চেয়ে দ্বিগুন লাভ হয়। ভুট্টার গাছ দিয়ে খড়ি হয়, ভুট্টার পাতা গরুর ও ছাগলে খাবার হয়। আমাদের নদী ভাঙ্গন ও বন্যা কবলিত অঞ্চল হওয়ায় ভুট্টা চাষ বাড়ছে। এখন ইরি-বোরো চাষে অনুপযোগী জমিতে ভুট্টার চাষ করা হয়।পাখিউড়া গ্রামের ভুট্টা চাষী হযরত আলী, আব্দুস ছালাম, ছোরমান আলী ও আব্দুল বাদশা মিয়া জানান, নদী ভাঙ্গনে বন্যার পানির সাথে বালি এসে ইরি-বোরো চাষ অনুপযোগী হওয়ায় ওইসব জমিতে ভুট্টা চাষ করছি বেশি।ইরি-বোরোর চেয়ে বেশী লাভবান হওয়ার আশা করছেন তারা। রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন বলেন, এবছর রৌমারীতেই উচ্চ ফলনশীল হাইব্রীড ৭৮৬হেক্টর, প্যাওনিয়ার, বেবিলন, কাবেরি-১০০হেক্টর,কাবেরি-৫০হেক্টরসহ পরলিব জাতের ভুট্টা চাষ করেছেন চরের কৃষকরা। তাছাড়া এবার ভালো ফলন হওয়ার সম্ভবনাও রয়েছে বেশ।ভুরুঙ্গামারী উপজেলার চর উত্তর তিলাই গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ জানান,জমিতে পানি ও সেচ কম লাগে এবং ফলনও অন্য ফসলের তুলনায় বেশী হয় বলে ভুট্টা চাষ করেছি।গছি গ্রামের কৃষক আয়নাল হক বলেন, এবারে ২ বিঘা জমিতে ভূট্টা চাষ করেছি। আশা করছি বেশ ভালো ফলন পাবো।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক জানান,সবচেয়ে জেলার রৌমারীতেই এ বছর ভুট্টার চাষ বেশি হয়েছে যা কিনা ৩৮৫০ হেক্টর।এছাড়াও রাজিবপুরে ২১৫০,সদরে ৪৩০,উলিপুরে ৪৮৫,চিলমারী উপজেলায় বাম্পার ফলন হয়েছে।।
Leave a Reply