চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগষ্টকে কেন্দ্র করে শিবির নেতার পোস্ট দেখে তাকে পিটিয়ে আহত করেছে ছাত্রলীগের লোকজন। আজ মঙ্গলবার (১৫ আগষ্ট) সকাল ১১টার দিকে ভোলাহাট মোহবুল্লাহ কলেজ গেটে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ, ছাত্রলীগ, ছাত্রশিবিরের একাধিক নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা, জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুতে উপজেলা শিবিরের সাবেক সভাপতি সোহেল রানা তার নিজের ফেইসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দেন। পোস্টটিতে তিনি লিখেন, “জীবনের শেষ মুহূর্তে আল্লামা সাঈদি (রঃ) এর পরিবারের সদস্যদের পর্যন্ত কাছে যেতে দেয়নি হায়নারা, ঢাকায় একটা জানাযা পর্যন্ত পড়তে দেয়নি, এবার চিন্তা করে বলুন যে, ৭৫’র১৫ আগষ্ট কতটা জরুরি ছিল?”
এ পোস্টকে কেন্দ্র করে স্থানীয় উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার উপরে হামলা চালায়। তারা হলো-রেজাউল করিমের ছেলে কাওসার, আফজালের ছেলে আমানুল্লাহ, নজরুল ইসলামের ছেলে টমাস, আব্দুর রশিদের ছেলে আব্দুল আহাদ, মৃত দুদু শেখের ছেলে শাহনেওয়াজ তোতা সহ আরও অনেকেই।
ঘটনায় আরও জানা গেছে, ভোলাহাট মেডিকেল মোড়স্থ একতা মার্কের ২য় তলার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে নিচে নেমে আসার সময় মেডিকেল মোড়ের মুজিব চত্বর থেকে কলেজ গেট পর্যন্ত সোহেল রানাকে মারতে মারতে ছাত্রলীগের লোকজন নিয়ে যায়। সেসময় সোহেল রানাকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ উদ্ধার করে ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
কথা হয় উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি আশরাফুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, শোক দিবসে প্রোগ্রাম শেষ করে যাওয়ার পথে কলেজ গেটে সোহেল রানার সাথে ছাত্রলীগের ছেলেদের একটা ঝামেলা হয়েছে আর সেটা শোক দিবসের ফেসবুকের একটা পোস্ট দেয়া কে কেন্দ্র করে। আমি এতোকুই জানি। আমি এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত নয়।
ভোলাহাট উপজেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি মাসুদ রানা জানান, ফেসবুকে পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে ২০-২৫ জনের মতো ছাত্রলীগের লোকজন গোহালবাড়ি এলাকার আশরাফুল মাহালতের নেতৃত্বে সোহেল রানার উপরে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে বেল্ট ,রড ও রেঞ্জসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করে গুরুতর আহত করেছে।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় আমি সহ তার পরিবারের লোকজন থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানার ওসি মামলা নেয়নি। কোর্টে মামলা করতে বলেছে। উল্টো সোহেল রানার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলার নাকি প্রস্তুতি চলছে বলে আমাদেরকে জানিয়েছে।
ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক শ্রী আশিষ কুমার জানান, সোহেলের মাথায়, দু’চোখে ও হাতে আঘাত লেগেছে। তবে চোখের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম রেজা মোবাইল ফোনে জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply